মনিরুল ইসলাম: [২] চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ সংসদের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম সংসদে উচ্চারণ করায় ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বির এর প্রতিবাদ করেন। ডেপুটি স্পীকার বলেন, এরা ২ জন সাজাপ্রাপ্ত আসামী এদের সাথে একটি নির্বাচিত সরকার কি ভাবে জাতীয় ঐক্য করতে পারে। এদের নিয়ে সংসদে একথা বলা যায় কি। এরপর ফ্লোর নিয়ে হারুন তার বক্তব্যে সময় ডেপুটি স্পীকারের ইন্টারআপ করার অভিযোগ করে সংসদ অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন।
[৩] মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে হারুন অর রশিদকে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার জন্য ১২ মিনিট সময় দেয়া হয়।
[৪] বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে হারুনর রশিদ চলমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে মানুষ বাঁচানোর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রস্তাব করেন। এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহবান জানান। বলেন, জাতীয় দুর্যোগের সময় একা সব সামাল দেয়া সম্ভব নয়। সকলে মিলেই এর সমাধান করা সম্ভব। তিনি বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ তুলে তা প্রত্যাহারের দাবি করেন। সংসদে বেগম খালেদা জিয়স ও তারেক রহমানের প্রসঙ্গ ওঠায় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা সবাই তার প্রতিবাদ করেন। সংসদে হৈচৈ করেন।হারুন বলেন, হৈচৈ করে লাভ নেই। যা সত্য তাই আমি বলছি। হারুনুর রশীদ আকাশী কালারের মুজিব কোর্ট পরে বক্তব্য রাখেন।
[৫]এরই মধ্যে হারুনর রশিদের নির্ধারিত ১২ মিনিট শেষ হয়ে যায়। তবে তিনি না বসে বক্তব্য অব্যাহত রাখেন এবং সময় বাড়িয়ে দেয়ার জন্য ডেপুটি স্পীকারের কাছে আবেদন করেন। যদিও সংসদের সভাপতিত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার সময় বাড়িয়ে দেননি। এর প্রতিবাদ করে হারুনর রশিদ সংসদ কক্ষ ত্যাগ করতে উদ্যত হলে ডেপুটি স্পিকার তাকে অনুরোধ করে বসতে বলেন এবং তার কথা শুনতে অনুরোধ করেন।
[৬] এই পর্যায়ে হারুন তার চেয়ারে বসলে ডেপুটি স্পীকার এ্যাভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, আপনি জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন এটি সুন্দর প্রস্তাব। কিন্তু আপনি এমন দু’জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন যাদের কথা আমি সংসদের এই চেয়ারে বসে উচ্চারণ করতে চাই না। একটি নির্বাচিত সরকার কোনো কনভিক্টেড (দণ্ডিত) ব্যক্তির সঙ্গে ঐক্য করতে পারে না।
[ ৭] এসময় ডেপুটি স্পীকার তার কিছু অসংসদীয় কথা তার বক্তব্যে রযেছে উল্লেখ করে সংসদের প্রসিডিউর থেকে তা বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেন। স্পীকারের বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনার পরামর্শে বিএনপির এমপি হারুনকে বাজেটের ওপর আর এক মিনিট বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। এ সময় হারুন ফ্লোর নিয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
[৮] ডেপুটি স্পীকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আপনি সময় বাড়িয়ে দেননি। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলার পর আপনি এক মিনিট সময় বাড়িয়েছেন। আমি আর বক্তব্য দেব না। আপনি আমার বক্তব্যে ইন্টারাপ্ট করেছেন। এর প্রতিবাদে আমি সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছি। এর সঙ্গে সঙ্গেই হারুন কক্ষ ত্যাগ করেন।
[৯] বিএনপির সংসদ সদস্য ওয়াকআউট করে চলে যাওয়ার পরপরই ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বী মিয়া হাউসকে উদ্দেশ করে বলেন, হারুনের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য আমি একাই যথেষ্ট। সংসদে কোনো সদস্য অসংসদীয় বক্তব্য দিলে আমি অবশ্যই তা ইন্টারাপ্ট করব। এটা সরকারি দলের কেউ দিলেও করবো বিরোধী দলের কেউ দিলেও করবো। আমি উনার বক্তব্যের জবাব দিতে একাই সম্ভব। সম্পাদনা : খালিদ আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :