কামরুল হাসান মামুন : বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি দেখে হতাশ চীনা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী দল। চীনা বিশেষজ্ঞ দল আরো বলেছেন, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ চূড়ায় পৌঁছেছে কি না, বলা কঠিন। আসলে কঠিন না কিন্তু একটি দেশের অতিথি হয়ে সেই হোস্ট দেশে বসে কি খুব কঠিন সত্য কথা বলা যায়? তারপরও যতটুকু বলেছেন তাতেই আমাদের করোনা মোকাবেলা যে ভয়াবহ ভুলে ভরা তা স্পষ্ট হয়েছে।
বাংলাদেশ সফররত চীনা প্রতিনিধিদলের প্রধান, চীনের প্রধান চিকিৎসক ডা. লি ওয়েন ঝিও বাংলাদেশের করোনা মোকাবেলা প্রচেষ্টাকে 'অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মতো' বলেছেন। কারণ, এখানে লকডাউন কার্যকর করা হয়নি, দ্রুত করোনা সনাক্তের ব্যবস্থা করা হয়নি, কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং এর উদ্যোগ নেয়া হয়নি, এবং আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসার প্রয়াস নেয়া হয়নি। ফলে করোনা ভাইরাস কোথায় কার মধ্যে আছে এবং কার মধ্যে নেই- এটা জানা যাচ্ছে না, এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এইদিকে ভয়েস অফ আমেরিকা এক রিপোর্টে বলেছে "বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা ব্যবস্থা সংকুচিত করে ফেলা হচ্ছে"!কি ভয়াবহ ব্যাপার বুঝতে পারছেন। অথচ সরকার এখনো জীবন আর জীবিকা নিয়ে আছে। এখনো আমরা করোনার ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারছি না। আসলে যারা করোনা মোকাবেলার দায়িত্বে তাদের আর ভয়াবহতা উপলব্ধি করার মত জ্ঞান বুদ্ধিই নেই। থাকলে আজ ৩ মাস পর আমরা এই অবস্থায় আসতাম না।
এখানে যে লকডাউন যে কার্যকর না তাতো আমরা নিজেরাই দেখছি, গণমাধ্যম দেখে তা প্রচার করছে। আমাদের করোনা টেস্ট ও কন্টাক্ট ট্রেসিং যে অপ্রতুল তাতো বলাই বাহুল্য। কক্সবাজার হবিগঞ্জের লকডাউনের অবস্থা টিভিতে দেখছিলাম। হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারিনা। আমরা লকডাউনের সঙ্গাকেই নতুন মাত্রা দিয়ে দিয়েছি। এর মধ্যে আবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন করোনার মধ্যেও উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটাই সমস্যা। এইরকম একটি সময়ে জীবনের সাথে জীবিকাকে ডেকে আনা মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা দেয়। মানুষ করোনাকে চোখে দেখে না তাই তারা আপনার কথাকে গুরুত্ব দিয়ে জীবিকাকেই গুরুত্ব দিবে।
এইসব লিখতে লিখতে ক্লান্ত কিন্তু কেউ শুনছে বলে মনে হচ্ছে না।
আপনার মতামত লিখুন :