ডেস্ক রিপোর্ট : [২] বিশ্বজুড়ে মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৯০ লাখ ৩১ হাজার ৭৮৯ জনে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারসের জরিপে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
[৩] ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন চার লাখ ৬৯ হাজার ৫২৬ জন। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৭ লাখ ৯৫ হাজার ৪২১ জন।
[৪] এদিকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তে এগিয়ে তরুণ ও যুবকরা। মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশির বয়স ২১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এদের সংখ্যা প্রায় ৫৫ শতাংশ।
[৫] করোনায় বয়স্কদের মৃত্যুর হার বেশিও হলেও পিছিয়ে নেই তরুণ-যুবকরা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে যুবকদের আক্রান্তের হার তুলনামূলকভাবে বেশি।
[৬] গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৩৫৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন। একই সময়ে মারা গেছেন ৩৯ জন। সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৮৪ জন।
[৭] স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে তরুণ ও যুবকদের আক্রান্ত হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, যুবকদের নিয়ম না মানার প্রবণতা। এছাড়া পেশাগতসহ নানা অজুহাতে ঘরের বাইরে যাওয়া, ধূমপানে আসক্তি ইত্যাদি। করোনার ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে তরুণ ও যুবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেন তারা।
[৮] এদিকে রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে তিন হাজার ৫৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
[৯] এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ১২ হাজার ৩০৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৪৬৪ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৮৪ জন। সব মিলে সুস্থ হলেন ৪৪ হাজার ৭৯৭ জন।
[১০] আইইডিসিআরের (রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান) তথ্যমতে, দেশে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ২১-৩০ বছর বয়সীরা। এদের সংখ্যা ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ। এরপরেই আছেন ৩১-৪০ বছর বয়সীরা। তাদের হার ২৭ দশমিক এক শতাংশ। গত এপ্রিলে ২১-৩০ বছর বয়সীদের হার ২৪ এবং ৩১-৪০ বছর বয়সীদের আক্রান্তের হার ছিল ২২ শতাংশ।
[১১] ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের শনাক্তের সংখ্যা ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে শনাক্ত ১১ দশমিক ২ শতাংশ এবং ষাট বছরের বেশি শনাক্ত রোগী সংখ্যা ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে আক্রান্তের হার সাত দশমিক ৩ শতাংশ। সবচেয়ে কম শনাক্তের হার এক থেকে ১০ বছরের বয়সীরা।
[১২] তরুণ ও যুবকদের সচেতন ও সতর্ক থাকতে বারবার পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানার মতে, তরুণ ও যুবকরা কর্মস্থলে বেশি থাকেন। ফলে তাদের বাইরে বেশি বের হতে হয়। তবে কাজ কিংবা বয়স যে কারণেই হোক, তরুণরা সচেতন হচ্ছেন না, যথাযথভাবে মেনে চলছেন না স্বাস্থ্যবিধি।
[১৩] এজন্য ২১-৩০ এবং ৩১-৪০ বছর বয়সীদের সতর্ক ও সচেতন থাকতে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। কারণ এদের কারণে পরিবারের সদস্যরা ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
[১৪] স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তরুণরা মাস্ক পরছেন না, সামাজিক দূরত্ব মানছেন না, নিয়মিত হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব একেবারেই মানছেন না। রোগী শনাক্তে এদের সংখ্যা বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে নুমনা পরীক্ষার হার। বৃদ্ধদের চেয়ে তরুণরা লাইন ধরে কষ্ট করে হলে নুমনা পরীক্ষা করাচ্ছেন।
[১৫] তাই রোগী শনাক্তে তাদের হার বেশি। আবার তরুণরা পেশাগতসহ নানা কারণে বাইরে যাচ্ছেন। কিন্তু সিনিয়র সিটিজেনদের খুব একটা বের হতে হয় না। তরুণরা সুশৃঙ্খল জীবনযাপন ততটা করছেন না। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, চায়ের দোকানেও এদের ভিড়। মাস্ক থাকলেও সেটা খুলে ফোনে কথা বলছেন, ধূমপান করছেন, বাসায় ফিরে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। যার কারণে তরুণ-যুবকদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।যুগান্তর, প্রিয়ডটকম
আপনার মতামত লিখুন :