ইসমাঈল হুসাইন ইমু : [২] আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ মাছুরা খাতুন হত্যার নেপথ্যে পরকীয়া ছিলো।স্বামী মোস্তফা মোল্লা নিজেই স্ত্রী মাছুরা খাতুনকে মোবাইল চার্জারের তার দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। র্যাবের তদন্তে এমন রহস্য উঠে এসেছে। শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে স্বামীকে গ্রেফতার করে র্যাব।
[৩] জানা গেছে, গত ১৫ মে সকাল ১০টায় আশুলিয়া ডেন্ডাবর এলাকায় জনৈক মোখলেছুর রহমানের চারতলা বাড়ির দ্বিতীয়তলা দক্ষিণ পাশের ফ্লাট থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন দুপুরেই পরিবারের সদস্যরা আশুলিয়া থানায় ছবি দেখে মৃতের পরিচয় শনাক্ত করে।
[৪] পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করে আসামিরা তাকে ২/৩ দিন আগে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে মৃতের স্বামী মোঃ মোস্তফা মোল্লা গা ঢাকা দেয়। এ হত্যাকাণ্ডে নিহতের বড় ভাই মোঃ নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে ১৬ মে আশুলিয়া থানায় নিহতের স্বামীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই গৃহবধূকে খুন করা হয়।
[৫] এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডে র্যাব-১ তাৎক্ষণিকভাবে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়।
[৬] গত ১৯ মে রাতে র্যাব-১ এর একটি দল অভিযান শুরু করে জানতে পারে, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা বিসিক এলাকায় হত্যাকারী অবস্থান করছে। পরে শনিবার রাতে মোস্তফা মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। সে নাটোরের ইব্রাহিমপুর গ্রামের মোঃ আব্দুর রশিদ মোল্লার ছেলে।
[৭] প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার স্বামী মোস্তাফা মোল্লা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। মোস্তফা মোল্লা জানায়, দেড় বছর আগে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক তার সঙ্গে মাছুরা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর হতে স্ত্রী মাছুরার অনৈতিক সম্পর্কের কারণে বিবাদ লেগেই থাকতো। হত্যার বিবরণ দিতে গিয়ে মোল্লা জানায়, ১৩ মে দুপুর ১২টায় তার স্ত্রী মাছুরা খাতুন রান্না করছিল। ঠিক তখনই তার মোবাইল ফোনে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসে। সে তাকে জিজ্ঞাস করে, কার সঙ্গে কথা বলছো? মাসুমা সঙ্গে সঙ্গে ফোন থেকে নাম্বারটি মুছে ফেলে। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং তার স্বামী বাইরে চলে যায়। পরবর্তীতে সে বিকেল ৪টায় বাসায় ফিরলে ওই ঘটনা নিয়ে দ্বিতীয় দফায়ও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। সে সময় দুজনেই মারমুখী আচরণ করে। ১৪ মে সকাল ৬টায় দুজনের মধ্যে আবারো কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সে তার স্ত্রী মাছুরাকে শারীরিক নির্যাতন করে গলায় মোবাইল চার্জারের তার পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
আপনার মতামত লিখুন :