আলতাফ পারভেজ : প্রায়ই চা শ্রমিকদের নিয়ে লিখি। কারণ কেবল তাদের আর্থ-সামাজিক বিপন্নতাই নয়, পাহাড়সম এক মানবিকতারও প্রতীক এই কমিউনিটি। চলতি সপ্তাহে তাতে আরেক অনন্য সাংস্কৃতিক নজির স্থাপিত হলো। সেটা বলতেই আজকের ছবিগুলো শেয়ার করছি। অনেকেই ইতোমধ্যে কুলাউড়ার কালিটি চা-বাগানের সংকট, আন্দোলন ও তার আপাত বিজয়ের কথা জানেন। লড়াই-সংগ্রাম করে সম্প্রতি ১৩ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি পেয়েছে সেখানে শ্রমিকরা।
কিন্তু এই মজুরি পেয়েই তারা একটা অংশ স্বপ্রণোদিতভাবে চাঁদা হিসেবে দিয়েছে রেমা চা-বাগানের খাদ্য সংকটে পড়া শ্রমিকদের। ‘রেমা’ কালিটি থেকে বহু দূরে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে। সেখানেও শ্রমিকদের ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া পড়ে আছে। করোনার দুর্যোগের মাঝে কাজহীন-মজুরিহীন অবস্থায় ওই বাগানের শ্রমিকরা খাদ্য সংকটে বিপন্ন। প্রায় সাড়ে ৪শ স্থায়ী-অস্থায়ী শ্রমিক আছে এখানে। কিছুদিন আগেও একই রকম বিপন্নতা ছিলো কালিটিতে।বহু দূরের রেমার শ্রমিকদের জন্য কালিটির শ্রমিকদের এই যে সংহতি ও অবদান এটা করোনাকালে বাংলাদেশের শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তদের জন্য একটা সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকলো ইতিহাসের পাতায়।
বাংলাদেশ এই বাগিচা শ্রমিকদের পৃথক জাতিসত্তা, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সামান্যই স্বীকৃতি দিয়েছে অতীতে। তাদের অর্থনৈতিক বঞ্চনাও দাসসুলভ অবস্থা মনে করিয়ে দেয়। কিন্তু নি¤œবর্গ তার সংগ্রামী সত্তার ভেতর কীভাবে উন্নত মানবিক সংহতি ও পারস্পরিক সহযোগিতার রাজনীতিকে ধারণ করে রাখে কালিটির হাড় ঝিরঝিরে মানুষগুলো আজ তার অসাধারণ নজির রাখলেন। যোগাযোগ করে জানলাম আগামীকালই কালিটির তরুণরা তাদের সহায়তা নিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা দূরত্বের রেমার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবে। শুভকামনা। ফেসবুক থেকে