এম. আমান উল্লাহ, কক্সবাজার প্রতিনিধি : [২] করোনা পরিস্থিতিতে জনগণকে সচেতন রাখার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলা ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার চারটি উপজেলায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন ‘‘সকলের সুস্থতাই আমাদের কাম্য’’ স্লোগানকে সামনে রেখে তাদের সার্বিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
[৩] মানুষকে করোনা বিষয়ে সচেতন করা, চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, জীবাণুনাশক কার্যক্রম পরিচালনা ও লকডাউন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রান্তিক মানুষের কাছে নিজেদের রেশন বাঁচিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। সংকটময় এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে, আধার কাটাতে অতি দরিদ্র মানুষের পাশে থাকার সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা।
[৪] এছাড়া জনসচেতনতায় মাক্স বিতরণ, সেনিটাইজার বিতরণ, সেনাবাহিনীর গাড়ি দিয়ে রাস্তায় বিশুদ্ধ পানি ছিটানো, কক্সবাজার প্রবেশ পথে জরুরী প্রয়োজনে প্রবেশকৃত গাড়িসমূহে জীবাণুনাশক ছিটানো, জনসচেতনতায় মাইকিং করা, ফুল হাতে দিয়ে পথচারীদের ঘরে ফেরানোসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
[৫] এরই ধারাবাহিকতায় আজও জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কর্মহীন হতদরিদ্র মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে রামু সেনানিবাসের সেনাসদস্যরা। তারা আত্মমানবতার সেবায় নিজেদের রেশন বাঁচিয়ে চাল, ডাল, আটা, আলু, পিঁয়াজ, তেল, লবণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রকৃত অভাবগ্রস্ত, ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষদের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন।
[৬] এছাড়া সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিম কর্তৃক রামু উপজেলা ও পেকুয়া উপজেলায় অসহায় মানুষদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্যালাইন বিতরণের পাশাপাশি ছোট ছোট বাচ্চাদের চিপস ও চকলেট বিতরণ করেন সেনাসদস্যরা।
[৭] এদিকে গত (৮ এপ্রিল) থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার লকডাউন ঘোষণার পর থেকে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি চেকপোস্ট স্থাপন করেছে সেনাবাহিনী।
[৮] জেলা শহর ছাড়াও আশেপাশের উপজেলায় টহল কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। টহলরত সেনা সদস্যরা মানুষের সমাগম দেখলেই গাড়ি থামিয়ে তাদের সাথে কথা বলছে এবং দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে ঘরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন।
[৯] সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারনে জরুরি প্রয়োজনে যারাই বাইরে বের হচ্ছেন তাদের প্রায় সবাইকে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
[১০] পাশাপাশি কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় ১১ লক্ষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত মায়ানমার নাগরিকদের ৩৪ টি ক্যাম্পে করোনাভাইরাস সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করছে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের সেনাসদস্যরা। সেনা ক্যাম্পের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা মাঝি ও স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে বৈঠক অব্যাহত রয়েছে।
[১১] মায়ানমার নাগরিক ক্যাম্প এলাকায় সেনাবাহিনী পর্যাপ্ত সংখ্যক নতুন চেকপোষ্ট স্থাপনের পাশাপাশি যৌথ টহল কার্যক্রমের পরিধি বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়েছে। সীমিত করা হয়েছে বহিরাগতদের চলাচলও।
[১২] রামু সেনানিবাস সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের উপর যে দায়িত্ব বর্তেছে তা শতভাগ পালনে সচেষ্ট থাকবেন তারা। এলক্ষ্যে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবতার সেবায় যুদ্ধকালীন সময়ের মতই তারা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। দেশের স্বার্থে সকল প্রকার কর্মকান্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :