সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু : ভয়ই বলি, আতঙ্কই বলি, তথাকথিত লকডাউনের (ছুটির) প্রথম দিন সেটা ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি ছিলো। কিন্তু বাঙালি মনস্তত্ত্ব না বুঝে প্রথমেই বেছে নেওয়া হলো নরম পন্থার ভাষ্য। বলা শুরু হলো ভয় নয়, সচেতনতাই জরুরি। প্রভাবশালী প্রবীণ একজন ডাক্তারকে বিজ্ঞাপনে আনা হলো। তিনি মাথা দুলিয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘করোনা তেমন কঠিন কোনো রোগ নয়। সাধারণ সর্দিজ্বরের মতোই, অধিকাংশ মানুষ এমনিতেই ভালো হয়ে যায়’। মাঝে ভোল বদলে কদিন অন্য বচন নিয়ে টিভিতে এসেছেন। আজ নতুন একজন টিভিতে এসেছেন প্রায় একই রকম ভাষ্য নিয়ে, সেখানেও করোনা যে ভীতিকর একটা রোগ তা বোঝার কোনো মেসেজ বা টোনই নেই। প্রথমেই ভয় বা আতঙ্ক ছড়ানোর কথা বলেছিলাম কারণ এই ভয়, আতঙ্ক না ছড়ানোর কারণে সিংহভাগ মানুষ করোনাকে কেয়ারই করলো না। রাস্তায়, টিস্টলে আড্ডা দিলো, ধুমছে বাজারে গেলো, দলে দলে জানাজার নামাজে এলো, জামাতে নামাজ পড়ার জন্য প্রায় জেহাদিজোশে তেতে উঠলো। আর আমাদের গার্মেন্ট মালিকরা শ্রমিকদের নিয়ে ইচ্ছামতো এখনো খই ভাজছেন। সব মিলিয়ে আমাদের সোকল্ড লকডাউন সহস্র ছিদ্রের ছাতায় পরিণত হয়ে গেছে।
এখন কেবল অপেক্ষা বিষবৃষ্টি ফোঁটা ফোঁটা নামবে নাকি মুষলধারায় নামবে সেটা দেখার জন্য বসে থাকা। আতঙ্ক ছড়ানো সুস্থতার কথা নয়। আমিও তা সমর্থন করি না। কিন্তু আমরা বাঙালিরা সুবোধ বচনে সোজা পথে হাঁটি না বলেই ভয় দেখানোর কথাগুলো বলেছি। এখনো মনে হয় সময় হয়তো কিছুটা আছে, শেষ চেষ্টা করে দেখতে পারেন মানুষকে সত্যিকার অর্থে লক করে ঘরে রাখা যায় কিনা। ফেসবুক থেকে