আসাদুজ্জামান সম্রাট: [২] অন্যান্য পেশাজীবীদের মতো গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা মোকাবেলায় কাজ করছেন। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলমের ব্যবস্থাপনায় রাত-দিন পরিশ্রম করে করোনা মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন।
[৩] চীনের উহান প্রদেশ থেকে ফিরিয়ে আনা শিক্ষার্থীদের জন্য আশকোনার হজ্ব ক্যাম্প কোয়ারেন্টাইনের উপযোগী করে প্রথম থেকেই এ লড়াইয়ে সামিল হয় গণপূর্তের প্রকৌশলীরা। পরবর্তীতে ইটালি ফেরত প্রবাসীদেরও সেখানে রাখা হয়। গত ২০ মার্চ হজ্ব ক্যাম্পটি সেনাবহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
[৪] কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোতে পিসিআর ল্যবরেটরীর অবকাঠামো নির্মাণ, আইসোলেশন ইউনিট, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, করোনা ইউনিট স্থাপন ছাড়াও এসব স্থাপনাগুলোতে নিরবিছিন্ন পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজও করছে অধিদপ্তরটি।
[৫] ইতিমধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, খুলনা মেডিকেলসহ ১৮টি হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরীর অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ ৪৭টি হাসপাতালে সাড়ে ৯শ’রও বেশি শয্যার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণ করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
[৬] ৮টি হাসপাতালে ৮৫০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ১১ টি হাসপাতালে ৩৫০ শয্যার করোনা ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মুন্সিগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতাল, ট্রমা সেন্টার, টাঙ্গাইল ইত্যাদি।
[৭] বিভিন্ন হাসপাতালে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আইসিইউ বেড স্থাপনেও কাজ করছে অধিদপ্তরটি। আইইডিসিআর-এর নতুন ১০ তলা ভবনের নীচতলায় স্যাম্পল কালেকশন কক্ষ ও ক্যান্টিন এবং ডিউটি ডাক্তারদের থাকার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের তিনটি কক্ষকে আধুনিকায়ন এর মাধ্যমে ২৯ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ এবং করোনা রোগীদের ব্যবহার্য পোড়ানোর জন্য ইনসিনারেটর নির্মাণ করা হয়েছে। মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১৮০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং ১০ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ করা হয়েছে।
[৮] মানবিক সাহায্য হিসেবে দেশের এ দুর্যোগকালে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা বৈশাখী ভাতার ৫০ শতাংশ ৬০ লাখ টাকার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়েছেন। এছাড়া বঙ্গভবন, গণভবন, বাংলদেশ জাতীয় সংসদ ভবন, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার মহোদয়গণের বাসভবন, ভিআইপি আবাসিক এলাকা, মন্ত্রী, বিচারপতি, সচিব ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের আবাসিক কমপ্লেক্স ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতাধীন সরকারী বিভিন্ন কেপিআই’সহ অন্যান্য অফিস ও আাবাসিক এলাকায় নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করাসহ পরিষ্কার পরিছন্নতা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
[৯] গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, করোনার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে চিকিৎসক নার্সরা সম্মুখ যোদ্ধা হলে, আমরা সহযোদ্ধা। এই যুদ্ধে গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের নির্দেশে নিরলসভাবে আমরা কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ যুদ্ধে আমরা জয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।