শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ০৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মধ্য বা নিম্নবিত্ত পরিবারের কান্না কেউই শোনে না

সাইদুর রহমান : মৃত্যুর হাতছানি দিচ্ছে। হয়তো বা দ্রুত পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু এভাবে আগেভাগে চলে যেতে হবে তা কল্পনাও ছিলো না। করোনা নামক ভয়ংকর ভাইরাসে সোনার বাংলাদেশ বিপর্যস্ত। করোনা প্রতিরোধে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে বা নিচ্ছে সরকার। আর্থিক ক্ষতি রোধে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছে। আমি মধ্যবিত্ত বা নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে ওই প্রণোদনার আওতাভুক্ত নই। আমার মতো অনেকের পরিবার আজ ঘরবন্দি। ঠিকঠাকমতো ঘরে খাওয়ার নেই। আত্মসম্মানবোধের কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য হিসেবে দু’মুঠো খাওয়ার জন্য পারি না কারও কাছে যেতে। পানি না ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে সাহায্য নিতে। বাবার কাছে নেই সন্তানের দুধ কেনার টাকা। স্ত্রী-সন্তানের চিকিৎসার টাকাও শেষ। একটু কান পাতলেই শুনতে পাবেন নি¤œ বা মধ্যবিত্ত পরিবারের কান্না। আমরা ন্যূনতম আশা করেছিলাম, বাড়িওয়ালাদের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করে সরকার তিন মাসের বাড়িভাড়া মওকুফ করবে। বাড়িভাড়া মওকুফ করলে কিছুদিন ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকবো। কিন্তু সেই আশা বা প্রত্যাশা ফিকে গেছে। আর্থিক সংকটে আমরা যে যেখানে চাকরিরত সেখানে হয়তো ঠিকঠাকমতো বেতনও হবে না। সামনে সংসার কীভাবে চলবে তা জানি না। অজানা গন্তব্যে আমরা। সরকারের ভাষ্যমতে, আমাদের অর্থনীতি নাকি কানাডা বা সিঙ্গাপুরের মতো শক্তিশালী। তাহলে বাড়িভাড়া মওকুফে সমস্যা কোথায়? দ্রুত করোনা মোকাবেলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে সমস্যা কোথায়? মধ্য বা নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারের দরজায় খাওয়ার পৌঁছাতে সমস্যা কোথায়? বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানির স্টাফদের দুই-তিন মাসের বেতন পরিশোধ করতে সমস্যা কোথায়? আমাদের চেয়ে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল রাষ্ট্রগুলো পারলে আমরা পারছি না কেন?
আমরা সারাবছর সরকারকে ট্যাক্স দিই। দেশব্যাপী সরকার যে ত্রাণ দিচ্ছে তা আমাদের টাকায়। একশ টাকার চিনি কিনলে সরকারকে দুই টাকা কর দিয়েছি। এক লিটার তেলে ১৮ টাকা, একশ টাকার মোবাইল রিচার্জে ২২ টাকা, একশ টাকা হোটেলে খাইলে ১৫ টাকা কর পরিশোধ করেছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র ক্রয়ে কর দিয়েছি। সেই করের টাকায় চলে সরকার। সেই সরকার বিপদের সময় কেন আমাদের পাশে থাকবে না। আমাদের অনেক অধিকার খর্ব হয়েছে। শেষমেষ আমরা চেয়েছি নীরবে দু’মুঠো ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে। সেই অধিকারটুকুও শেষ হওয়ার পথে। শেষ পর্যন্ত করোনাভাইরাস বা আর্থিক সংকটে আমরা নিঃশেষ হয়ে যাবো। হে মহান আল্লাহ তুমি আমাদের রক্ষা করো। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়