সাগর আকন, বরগুনা প্রতিনিধি : [২] বরগুনা সদর উপজেলার ২ নম্বর গৌরিচন্না ইউনিয়নের ধূপতি মনসাতলী
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফাকে মারধরের ঘটনা ঘেটেছে। এরপর থেকে ভয়ে স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
[৩] সোমবার (১৬ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে ওই স্কুলে সরেজমিনে গেলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে অনুপস্থিত থাকার সত্যতা পাওয়া যায়। এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সহকারী শিক্ষককে স্কুল চলাকালীন সময়ে মারধর করা হয়।
[৪] ভুক্তভোগী সহকারি শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বর্তমানে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানাগেছে, সঠিকভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করাকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষকের ইন্ধনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে।
[৫] স্থানীয় জনসাধারণ ও কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকবৃন্দ জানান, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা ছাত্র-ছাত্রীদের যত্নের সাথে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষিকা শামসুন্নাহার মুনমুন প্রতিদিন দুপুর ১২ টায় স্কুলে
[৬] আসেন এবং এক টায় চলে যায়। তিনি সঠিকভাবে স্কুলের খোঁজ খবর না রেখে সরকারি বেতন তুলে নেন। সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা এসবের প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষিকা মোস্তফার বদলির ব্যবস্থা করেন।
[৭] সহকারি শিক্ষক গোলাম মোস্তফা এ বদলির বিষয় হাইকোর্টে আপিল করেন এবং হাইকোর্ট তার আপিলের পক্ষে রুল জারি করে ওই স্কুলে তার কর্মস্থল পুনরায় বহাল রাখেন। এ কারণেই প্রধান শিক্ষিকা শামসুন্নাহার মুনমুন ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী মোহাম্মদ জাকির খলিফা, মোহাম্মদ আরাফাত খলিফা, মোহাম্মদ বেল্লাল সহ আরও ৩/৪ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় স্কুল চলাকালীন সময় সহকারি শিক্ষক গোলাম মোস্তফার উপরে চড়াও হয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে কোমলমতি ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে বাসের লাঠি, জিআই পাইপ ও ইট দিয়ে দুই দফায় মারধর করেন। মারধরের এক পর্যায়ে শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফা অজ্ঞান হয়ে যান। এসময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষক গোলাম মোস্তফার স্ত্রী তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। মোস্তফা জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ২৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন আছেন।
[৮] আহত শিক্ষক মোস্তফা জানান, আমি যদি অন্যায় করে থাকি সেই বিচার মাথা পেতে নেবো। আর প্রধান শিক্ষক যদি অনৈতিকভাবে আমাকে সন্ত্রাসী নিযুক্ত করে মারধর করে থাকেন সেই বিচারের প্রত্যাশী আমি।
[৯] ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহানাজ আক্তারের নিকট ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে না আসার বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফার উপরে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ভয় পেয়ে স্কুলে আসেনা।
[১০] এ ঘটনার বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষিকা মোসা. শামসুন্নাহার মুনমুনের সাথে মুঠোফেনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।
[১১] বরগুনা জেলা প্রাইমারি শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) এমএম মিজানুর রহমান জানান, প্রশাসনিক ভাবে তাকে বদলী করা হয়েছে। তাছাড়া সে রুল জারী করে তার বদলী স্থগিতের কোনো প্রমান আমাদের দেখাতে পারেন নি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি স্কুলে না আসে তাহলে আমরা কি করতে পারি। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ