শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৩ মার্চ, ২০২০, ০৮:৫১ সকাল
আপডেট : ০৩ মার্চ, ২০২০, ০৮:৫১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমাদের দেশে শিক্ষাকে একেকটি বৃত্তে আটকে ছাত্র-ছাত্রীদের বিসিএসমুখী করে সমালোচনার মুখোমুখি করা হচ্ছে

 

 

রিবেল মনোয়ার: ২০১১-১২ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিগুলোতে সাকুল্যে প্রতিদিন বই ইস্যু করা হতো ২৪৯৫টি, ২০১৭-১৮তে এসে তা ঠেকেছে ৯৬৫তে। অবস্থা বেগতিক হতে বাকি নাই কিছু। খুব সম্প্রতি ডেইলি স্টারের প্রথম পাতায় 'অপধফবসরপ Academic books on shelves, Bcs Guides on tables'(মূলবই শেলফে, বিসিএস গাইড টেবিলে!) শিরোনামে বিপুলায়তন প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।

এখানে একপেশে দোষারোপ ছুড়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর। আমি যা দেখেছি, বিসিএসের ব্যাপারে অনেকেই আগ্রহী হন না প্রথমে। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন দেখা যায় ভালোভাবে বাঁচার সব পথ অন্তরায় তখন এদিকেই ঝুঁকতে হয়। নন ক্যাডারের সব চাকরিও এখানে একীভূত করা হয়েছে, ফলে যারা বিসিএসে আগ্রহী নন, তাদেরও এ পরীক্ষায় বসতে হয়। ৩ থেকে ৪ বছরের জন্য বন্দী হতে হয় লাইব্রেরিতে। পৃথিবীর কোথাও এমন দীর্ঘমেয়াদী পরীক্ষা আছে কিনা সন্দেহ। জাপানে অনার্স তৃতীয় বর্ষেই সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায়, ছয়মাসে পরীক্ষা হয়ে যায়—যারা টিকেন তারা অনার্সের চূড়ান্ত ফলাফলের পরদিনই জয়েন করতে পারেন কাগজপত্র দেখিয়ে। আর আমাদের দেশে টানা ৩ বছর লাগে— তারপরও চাকরি হবেই এমন নিশ্চয়তা নেই। কারণ পদ অতি নগণ্য।

যে সকল বাবা-মায়েরা অবস্থাপন্ন তাদের সন্তানরাই বেশি ও দ্রুত চাকরি পাচ্ছে, কারণ তাদের টিউশনি করে সময় নষ্ট করতে হয় না, সারাদিন পড়তে পারেÑপরিবারের আর্থিক সমর্থন তো আছেই। সমস্যাটা হয় খেটে খাওয়া শিক্ষার্থীদের। এরা না পারে সইতে না পারে কইতে। এদের ভালোবাসার মানুষটিও এমন দুঃসহকালে এদের ছেড়ে চলে যায়। কেউ কাধে হাত রেখে সাহস দেয় না। জ্বালাময় শরীরেও ওদের জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। সমাজের চোখ রাঙানি সইতে হয়। আমি দেখেছি শুধু পরকালের ভয়ে কেউ কেউ আত্মহত্যা করে না। আমাদের গোটা রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় কোনোকিছুই ঠিকঠাক নেই গোড়া থেকেই। সব চাকরির সুবিধা সমান নয়, সব চাকরিতে সবাই আবেদনও করতে পারেন না, সামাজিক বিজ্ঞানে পড়ুয়ারা শুধু সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে আবেদন করতে পারবেÑঅথচ আরও অনেক বিষয় সামাজিক বিজ্ঞানে অন্তভুক্ত। ইংরেজি পড়ে বাংলায় যাওয়া যাবে না, ইতিহাস পড়ে সমাজবিজ্ঞানে যাওয়া যাবে না। অথচ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এক বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়তে অসুবিধা হলে অন্য বিষয়ে মাস্টার্স, পিএইচডি করে সুউচ্চ সাফল্য লাভ করা যাচ্ছে।

আর আমাদের দেশে শিক্ষাকে একেকটি বৃত্তে আটকে ছাত্রছাত্রীদের বিসিএসমুখী করে সমালোচনার মুখোমুখি করা হচ্ছে দেদার। আমি আগেও বলেছি, এবারও বলছি বেকারত্বের কারণ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় দৈন্য ও দুর্নীতি। এটা না রুখে, সংস্কার না করে কোনোভাবেই বাংলাদেশকে সাফল্যম-িত করা সম্ভব নয়। এখন যা অবস্থা তা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে ভবিষ্যতে, সন্দেহ নেই। ফেসবুক থেকে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়