আরিফ মাহবুব : একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে ও ধর্মের সঙ্গে শিক্ষার অসঙ্গতি মোকাবেলায় যখন সে দেশের সরকার সব স্কুলকে ধর্মমুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ তখন ধর্মীয় মোল্লাদের গবেষণা ও লেখায় অবদান রাখতে পদক বিলি করে বেড়াচ্ছে, আমাদের সমাজ ধর্মকে ব্যক্তিগত চর্চায় সীমাবদ্ধ না রেখে ধর্মগুরুদের সরকারি পদকে ভূষিত করে চলেছেন। সুইডেনে ধর্মকর্ম পালনে কোনোই বাধ্যকতা নেই যদি না ধর্মীয় আচার, রীতি-নীতি আধুনিক সমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার না করে। তাই সুইডিশ মন্ত্রীরা ধর্মীয় বিশ্বাসভিত্তিক স্কুলগুলো সমাজ সম্পূর্ণভাবেই বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আরও একটি কথা আপনাদের জানিয়ে রাখছি যে কিছুদিন আগেই ছয়জন মসজিদের ইমামকে মসজিদে জুমার খুতবায় সমাজবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রদানের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করেও সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে গোয়েন্দা নরজরদারি জোরদার করা হয়। সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্রেটরা ধর্মীয় স্বাধীন বিদ্যালয়গুলোতে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিয়েছে। বেশ কয়েক বছর যাবৎ সুইডেনের ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজের নিয়ম-নীতি, আচার, সংস্কৃতিকে তোয়াক্কা না করার কারণে এ দেশে স্বাধীন ও সরকারি অনুদানে যে সব ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এতোদিন চালু ছিলো তা মোকাবেলায় সমস্ত ধর্মীয় স্কুল নিষিদ্ধ করতে সোশ্যাল ডেমোক্রেটরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সুইডেনের জনপ্রশাসন মন্ত্রী আর্দলান শেকারবি বলেছিলেন যে, ‘পুরোহিত এবং ইমামদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার দায়িত্বে থাকতে হবে না’। সুইডিশ শিক্ষামন্ত্রী আনা একস্ট্রোম পরামর্শ দিয়েছেন যে ধর্মীয় স্কুলগুলো ‘সমাজের পক্ষে খারাপ, এগুলো বন্ধ করা অপরিহার্য ছিলো’।
ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুভূতি বর্তমান আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বাধার সৃষ্টি করে বিধায় সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত হাতে নিয়েছে আর এতে জনসমর্থনও আছে বলেই সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্রেটরা ধর্মীয় স্বাধীন বিদ্যালয়গুলোতে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিয়েছে। একটি সুষ্ঠু সবল সমাজ ব্যবস্থা গড়তে হলে সমাজের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ধর্মের প্রভাবকে সম্পূর্ণ পরিহার করতে না পারলে একটি সভ্য সমাজে মানবতা ও ধর্ম নিরপেক্ষতা রক্ষা করা সম্ভব নয়। বিশেষ তদন্তকারী লার্স আরহেনিয়াসের দায়িত্ব হলো নতুন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ধর্মীয় শিক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার একটি রিপোর্ট জমা দেয়া। আমার মতামত হচ্ছে বাংলাদেশের সকল ওয়াজ মাহফিল, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাম্প্রদায়িক, সমাজ ও বিজ্ঞানবিরোধী বক্তব্য প্রদান ও প্রতিরোধে গোয়েন্দা নরজরদারি জোরদার করা প্রয়োজন। ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক উসকানি, ধর্মের নাম দেশজ সংস্কৃতি ও শিল্পীদের উপর আঘাত ও নিপীড়ন বন্ধ হোক এই আশা ব্যক্ত করছি। ধর্মীয় মোল্লাদের গবেষণা ও লেখায় অবদান রাখতে সরকারি বা রাষ্ট্রীয় পদক বিলিকরণ বিষয়টি আরও একবার ভেবে দেখা উচিত। ফেসবুক থেকে