মাজহারুল ইসলাম : আজ বাধাহীনভাবে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে কি না, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে বিএনপি। তারা মনে করছে, প্রচারণায় দুই মেয়রপ্রার্থী যে রকম সাড়া পেয়েছেন, সুষ্ঠু ভোট হলে তারা ইতিবাচক ফলাফল ঘরে তুলতে সক্ষম হবেন। কিন্তু তাদের শঙ্কা, বিগত নির্বাচনগুলোতে 'সহিংসতা ও কারচুপির কারণে' ভোটারদের মধ্যে যে নির্বাচনবিমুখতা বিরাজ করছে, এ অবস্থায় ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে ভোট দিতে যাবেন কি না। এর পাশাপাশি রয়েছে ইভিএম এ কারচুপির আশঙ্কা। সবমিলে ইভিএমসহ ৫ ইস্যুতে শঙ্কিত বিএনপি। এরপরেও সিটি নির্বাচনে থাকার সব প্রস্তুতি নিয়েছে এ দলটি।
এ ব্যাপারে বিএনপির নীতিনির্ধারক বলেছেন, কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপি ঠেকানো গেলে তাদের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত। তাই ভোটাররা যাতে বাধাহীনভাবে কেন্দ্রে আসতে পারে, সেটাই তাদের মূল ভাবনা। তবে তারা এও বলেছেন, নির্বাচনে কারচুপি হলে শক্তভাবে রাজপথে নামারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তাই আজ কোনোভাবেই ভোটের মাঠ ছেড়ে দেয়া হবে না। কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে পালটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সিটি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা নেতারা জানান, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বাধাহীন জমজমাট প্রচার-প্রচারণা চালালেও শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় তারা শঙ্কিত। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকা, ভোটারদের ভোট দেয়া নিশ্চিত করা, কেন্দ্র দখল ও কারচুপি ঠেকানোই এখন তাদের মূল চ্যালেঞ্জ। এসব কারণে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের আজ ভোর থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট নিশ্চিতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। মেয়র পদের জন্য দুই সিটিতে প্রায় ৫০ হাজার পোলিং এজেন্টকে ট্রেনিং দেয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, ইভিএমে ভোট গ্রহণই বিএনপির বড় চিন্তার কারণ। ইভিএমে একই ব্যক্তি ৩/৪টি কেন্দ্রে ভোট দিলেও তা ধরার উপায় নেই। কারণ বৃহস্পতিবার ইভিএম মেশিনে মক ভোট প্রদর্শনকালেও একই ব্যক্তি একাধিক কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। আজও এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তা ছাড়া সফটওয়্যারে ধানের শীষের ভোটটি নৌকা প্রতীকে দেখানোও সম্ভব।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহŸায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে বলেন, প্রচারেই বোঝা গেছে কারা বিজয়ী হবেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ইভিএমে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা জয় ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটিতে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহŸায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একই প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি প্রার্থীদের পক্ষে যে জোয়ার উঠেছে, তাতে সুষ্ঠু ভোট হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ধারে কাছেও আসতে পারবে না। প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ ও ষড়যন্ত্র না করলে দুইটি সিটিতে বিপুল ভোটে বিএনপির প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন।