মাজহজারুল ইসলাম : ওইসব কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা প্রতিপক্ষকে ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। তাই নির্বিঘœ প্রচারণা ও অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে এরই মধ্যে এসব প্রার্থীকে ডেকে সতর্ক করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরের ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। সূত্র : বাংলাদেশপ্রতিদিন
দুই সিটি করপোরেশনের অন্তত ২০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী গণমাধ্যমকে জানান, প্রতিনিয়ত তারা প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীদের হুমকি-ধমকির মধ্যে রয়েছেন। এমন অভিযোগ পেয়ে শতাধিক প্রার্থীকে ডেকে সতর্ক করেছে পুলিশ। এ কারণে ডিএমপির প্রতিটি বিভাগে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ভোটের দিন পর্যন্ত তাদের বিশেষ নজরদারির মধ্যে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, যাদের সতর্ক করা হয়েছে তার মধ্যে মতিঝিল বিভাগের ১৭, ওয়ারীর ১৫, রমনার ১৮, মিরপুরের ২১, উত্তরার ১৯, লালবাগের ১৪ জন রয়েছেন। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে সক্রিয় এলিট ফোর্স র্যাবও। পোশাকি টহলের পাশাপাশি চলছে গোয়েন্দা কার্যক্রম।
এ প্রসঙ্গে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল (অপারেশন) তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করা হচ্ছে। যেখানে মনে হবে বেশি ফোর্স রাখা উচিত সেখানেই অতিরিক্ত ফোর্স পাঠানো হবে। প্রতিটি মুহূর্ত আমরা মনিটরিং করছি।
স¤প্রতি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বিশেষ বৈঠকে র্যাবের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার জানান, দুই সিটি করপোরেশনের ৫৩ জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ১৫ থেকে ২০টি করে মামলা রয়েছে। ভবিষ্যতে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা যাতে প্রার্থী হতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব তোলা হয়।
জানা গেছে, দলীয় প্রভাবশালী কাউন্সিলর প্রার্থীদের হয়ে এলাকায় নীরবে ভোটের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে কয়েক শ সন্ত্রাসী। তাদের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত ও কারাবন্দী অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। অনেক ওয়ার্ডে দল মনোনীত প্রার্থীর ওপর নানা চাপ অব্যাহত রেখেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। তাদের কাউকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়ার নানা চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনায় প্রার্থীদের অনেকেই সংশ্লিষ্ট থানায় মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে অনেক প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তবু তারা ক্ষান্ত হননি।
ডিএমপির ৮ ক্রাইম ডিভিশনের কর্মকর্তারা জানান, প্রার্থীদের কাছে গিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে অনুরোধ জানাচ্ছে পুলিশ। সেই সঙ্গে কোনও প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার তথ্য পেলেই তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হচ্ছে।
জানা যায়, নির্বাচনের মাঠে প্রভাব বিস্তার করতে শতাধিক অস্ত্রধারী ক্যাডার সক্রিয় রয়েছে। তাদের কাছে রয়েছে একে-২২সহ বিপুল পরিমাণ ক্ষুদ্র অস্ত্র। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এসব ক্যাডার বাহিনীর তালিকা করে ধরার চেষ্টা করছে। এ ছাড়াও নির্বাচনে আন্ডারওয়ার্ল্ডের তৎপরতার ও সন্ত্রাসীদের হাতে কী পরিমাণ অস্ত্র আছে তার খোঁজ চলছে। সম্পাদনা : তন্নীমা আক্তার