মাজহারুল ইসলাম : উখিয়ার স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গারা আসার মাসখানেক পরে শারীরিক পরীক্ষায় দেখা যায় ৮৫ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস রয়েছে। পরের বছর আগস্টে সেটি গিয়ে দাঁড়ায় ২৭৩ জনে। আর ২০১৯ সালের ৮ মার্চে তা বেড়ে ৩১৯ হয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৭৭ জন। আর এইডসে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১৯ জন।
কুতুপালং এলাকার হোপ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে এইচআইভি ভাইরাস নিয়ে আসেন এক নারী। তিনি মিয়ানমারে ভান্তেদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি এই রোগের কথা আগে জানতেন না। নানা শারীরিক সমস্যা নিয়ে বারবার হাসপাতালে আসার পর জানতে পারেন, তিনি এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
ওই নারী জানান, এই রোগের কারণে তিনি এখন একঘরে হয়ে পড়েছেন। কেউ তার সঙ্গে থাকতে বা খেতে চায় না। পরিবারের লোকজনও ঠিকমতো কথা বলেন না। এইচআইভি আক্রান্ত আরেক পুরুষ জানান, তিনি মালয়েশিয়াতে ছিলেন। সেখানই তিনি এই রোগে আক্রান্ত হন। এ কারণে তাকে মালয়েশিয়া থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। তার ধারণা, মালয়েশিয়াতে অবৈধ মেলামেশার কারণেই এই রোগ হয়ে থাকতে পারে।
হোপ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে চান না। আর ক্যাম্পে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ যৌন জীবনে কোনো ধরনের নিয়ম মেনে না চলা। তিনি বলেন, তাদের কবিরাজি ওষুধ ও ঝাড় ফুঁকের ওপর প্রবল বিশ্বাস। অধিকাংশ রোগীই হাসপাতালে আসেন রোগ জটিল আকার ধারণের পর।
ক্যাম্পের চিকিৎসক ড. ইব্রাহীম ইসলামও বলেন অসচেতনতার কথা। তিনি বলেন, একসঙ্গে গাদাগাদি করে থাকার কারণেও নানাবিধ রোগের বিস্তার হচ্ছে। তা ছাড়াও ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ধরনের যৌন রোগ। জানা যায়, ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। এই রোগটি মূলত অপরিচ্ছন্নতার কারণে হয়ে থাকে। অধিকাংশ সময়ই এসব রোগ নিয়ে আসতে চান না তারা।
উখিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রঞ্জন কুমার দে গণমাধ্যমকে জানান, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রাও এসব রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। মারাত্মক ব্যাধি এইডস রোগটি এখন রোহিঙ্গাদের থেকে স্থানীয়দের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব