বাকী বিল্লাহ : সরস্বতী পূজার দিনে ভোট না মানার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেছেন, ‘বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে বহু ধর্মের মানুষ বসবাস করে। এ দেশের প্রায় ৮ শতাংশ মানুষ সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী। এটি ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র নয়, এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে এই সম্প্রীতি নষ্ট করা যাবে না। সন্ত্রাসী দখলদার ছাত্র সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের মতো ছাত্রদলেরও অসংখ্য সমালোচনা আছেÑ তবে সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে তাদের এই অবস্থানকে স্রেফ কৌশলী বা ফ্লুক মনে করি না। মৌলবাদী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের সংগ্রামের ইতিহাস আছে, তাদের অসংখ্য নেতাকর্মী ছাত্রশিবিরের হাতে খুন হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের ঐক্যজোট ক্ষমতায় থাকাকালেও দেখেছি জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য নিয়ে তাদের সব নেতাকর্মীর মধ্যেই তীব্র অস্বস্তি আছে। মূল দল বিএনপির বিপুল চাপের মুখেও তারা কখনোই শিবির বা অন্য কোনো ধর্মভিত্তিক ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে কোনো ক্যাম্পাসেই ঐক্য গড়েনি। শাহবাগের পরে তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধী আন্দোলনে শামিল হতে চেয়েছে, দলের মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য ছিন্ন করার জন্য বার্গেনিং করেছে।
আফসোস বিএনপি ছাত্রদলের কথা রাখেনি, তারা রেখেছে ভুট্টো সাহেবের (ফরহাদ মজহার, মাহমুদুর রহমানদের) কথা। না হলে ইতিহাসটা এতোটা তেতো হতো না। বিএনপি তখন জামায়াত-হেফাজতের পথে হেঁটেছে। আজকে যেমন আমরা এক দীর্ঘস্থায়ী ফ্যাসিজমের কবলে পড়েছি, তেমনি ২০১৩ সালে জামায়াত-হেফাজত সফল হলেও আরও তীব্র ফ্যাসিজমের অন্ধকারেই তলিয়ে যেতে হতো আমাদের। ক্ষমতার কেন্দ্রস্থলে থাকা সবগুলো দলের আগ্রাসী রাজনীতি এর আর কোনো বিকল্প রাখেনি আমাদের জন্য। এটাকে ভেঙে জনগণের পক্ষে বিকল্প স্রোত সৃষ্টি করার মতো কোনো রাজনৈতিক শক্তিও ছিলো না, এখনো নেই। তাই আজকের এই পরিণতি। বেটার লেট দ্যান নেভার। বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারকে মোকাবেলায় সব বিরোধী পক্ষ যদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আশা আকাক্সক্ষার ধারায় অসাম্প্রদায়িক পথ বেছে নেয় তাহলেই সুফল মিলবে। মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙিয়ে লুটপাটের এই ফ্যাসিস্ট শাসনের পথ তখন সত্যি সত্যিই বন্ধ হতে বাধ্য। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :