তন্নীমা আক্তার : গত কয়েকমাস ধরেই পেঁয়াজের বাজারে আগুন। সেই রেশ ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল, আটা, ময়দা, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দামে হঠাৎ অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চিকন চালের দাম কেজিপ্রতি সাত-আট টাকা, মোটা চালের দাম চার-পাঁচ টাকা, খোলা ময়দা কেজিতে সাত-আট টাকা, আটা এক-দুই টাকা বেড়ে যায়। বেড়েছে সয়াবিন তেলের দামও। এতে করে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম।
সরকারের একটি সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সুপরিকল্পিতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করায় বাজারকে অস্থির হয়ে ওঠে। বিষয়টি সরকারের ভাবমূর্তির ওপর প্রভাব ফেলছে। অবিলম্বে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।
দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৪ লাখ, মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় প্রায় ১৭ লাখ। আমদানির ৭ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের সিংহভাগই ভারত থেকে আসে, সেদেশে আকস্মিক বন্যার কারণে পেঁয়াজ উৎপাদন ব্যাহত হয়, তারা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। আর এ ধরনের আকস্মিক পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি ছিলো না। ফলে পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়। এই মুহূর্তে ভারতেও পেয়াঁজের দাম ২০০ থেকে ২৫০ রূপিতে চলে গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মনিটরিং ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। এ দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় সিন্ডিকেট গঠন করে অব্যাহতভাবে বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করেছেন। কেনোনা পাইকারি দাম কমলেও খুচরা একই দামে বিক্রি করছে ব্যবসায়িরা।
প্রসঙ্গত, নভেম্বরে চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মনিটরিং টিম এবং কন্ট্রোল রুম খোলে সরকার। পেঁয়াজের পর চালের দামে যাতে কারসাজির মাধ্যমে কেউ মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে তার জন্য আগেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, চালের বাজারদরে ঊর্ধ্বগতি প্রবণতা রোধে ঢাকা মহানগরের বড় বড় পাইকারি বাজার সরেজমিন তদারকির জন্য তিনটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি-১-এর নেতৃত্বে রয়েছেন সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। কমিটি-২-এর নেতৃত্বে খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নূরুল আলমের নেতৃত্বে কমিটি-৩ গঠন করা হয়। প্রত্যেক কমিটিতে তিনজন করে সদস্য রয়েছেন। এই তিনটি কমিটিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজধানীর বাজার মনিটরিং চালিয়ে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত মনিটরিং টিম বিভিন্ন খুচরা বাজারে গিয়ে তদারকি করলেও খুব একটা ফল মিলছে না। তদারকি শক্তিশালী করার পরামর্শ দেয়া হয়ে সরকারের ওই সংস্থার প্রতিবেদনে। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :