শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৭:২১ সকাল
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৭:২১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমতলী মুক্ত দিবস আজ

জিয়া সিদ্দিকী : আজ ১৪ ডিসেম্বর। ১৯৭১ এই দিনে বরগুনার আমতলী থানা হানাদার মুক্ত হয়েছিল। ১১ ডিসেম্বর বরগুনার বুকাবুনিয়া ক্যাস্প থেকে নৌকা যোগে প্রয়াত হাবিলদার হাতেম আলী, আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে দু’দল মুক্তিবাহিনী পঁচাকোড়ালিয়া হয়ে আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারে আসে। ১২ ডিসেম্বর আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদারের নেতৃত্বে একদল মুক্তি বাহিনী কুকুয়া ইউনিয়নের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পৌঁছেন। ওইখানে প্রয়াত সাবেক এমপি নিজাম তালুকদারের নেতৃত্বে অস্থায়ী ক্যাস্প করা হয়।

অপরদিকে গলাচিপার মুজিব বাহিনীর হারুন-অর-রশিদ ও আবদুর রব মিয়ার নেতৃত্বে একদল মুক্তিকামী যোদ্ধা ওই ক্যাম্পে আসেন। দু’গ্রুপ আমতলী থানা মুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

এদিকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম আসমত আলী আকন, ন্যাপ নেতা গাজী আমীর হোসেন ও স্কুল শিক্ষক দলিল উদ্দিন মিয়া আমতলী থানা শান্তিপূর্ণ ভাবে মুক্ত করতে মুক্তি বাহিনী ও পুলিশের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়। ওই সময় আমতলী থানায় কোন পাক বাহিনী ছিল না। থানায় ছিলেন ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়া, কয়েক জন পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী। ১৩ ডিসেম্বর সকালে তারা ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়ার সাথে বৈঠক করেন। ওসি শান্তিপূর্ণভাবে আমতলী থানা মুক্তি বাহিনীর হাতে ছেড়ে দিতে রাজি হয়ে ক্যাম্পে তাদের মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠায়। এ চিঠি মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে মধ্যস্থতাকারীরা পৌঁছে দেয়। মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা সন্ধ্যায় থানার পশ্চিম প্রান্তে চাওড়া নদীর পাড়ে একে পাইলট হাই স্কুল সংলগ্ন স্থানে অবস্থান নেয়। ওদিকে ওসি রইস উদ্দিন ভুইয়ার পাঠানো চিঠিটি ছিল একটি পাতানো ফাঁদ। মুক্তি বাহিনীরা থানায় আসলে গুলি করে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ওসি’র এ পরিকল্পনা মুক্তি বাহিনী জেনে যায়। রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে মুক্তি ও মুজিব বাহিনী যৌথভাবে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। জবাবে রইস উদ্দিন ও রাজাকার বাহিনী বর্ষার মত গুলি ছোঁড়ে। শুরু হয় যুদ্ধ। রাতভর গুলি বিনিময়ে এক নৌকার মাঝি শহীদ হয় (তার নাম পাওয়া যায়নি)। কাক ডাকা ভোরে গলাচিপার মুজিব বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধা হারুন-অর-রশিদ মতান্তরে ফেরদৌস হায়দার নদী পার হয়ে থানার প্রাচীর ঘেঁষে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। বিকট শব্দে গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হয়। পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী মানষিক ভাবে ভেঙে পরে। অপরদিকে মুক্তিকামী জনতা দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত থেকে বিজয় মিছিল নিয়ে থানার দিকে আসতে থাকে এবং মুক্তিবাহিনী নদী পাড় হয়ে উত্তর প্রাপ্ত থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়। অবস্থার বেগতিক দেখে ওসি রইস উদ্দিন, পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী সাদা পতাকা উত্তোলন করে আত্মসমর্পনের আহবান জানান।

১৪ ডিসেম্বর সকাল ৮ টায় মুক্তি ও মুজিব বাহিনী যৌথ ভাবে এবং জাগ্রতজনতা “জয় বাংলা” শ্লোগান দিয়ে থানার প্রথম ফটকে প্রবেশ করে। এ সময় ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়া ও তার বাহিনী অস্ত্র তুলে আত্মসমর্পণ করে। পরে আওয়ামী লীগ নেতা আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদার ওসি রইস উদ্দিনসহ তার সহোযোগীদের আটক করে। মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং উপস্থিত জনতা জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আমতলী থানাকে মুক্তাঞ্চল ঘোষণা করা হয়। সম্পাদনা : জহুরুল হক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়