ইয়াসিন আরাফাত : আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। জানা গেছে, সরকার ও দলীয় কার্যক্রম পৃথক নেতা দিয়ে চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভা ও দলের পদ, দুই জায়গাতেই আছেন এমন কয়েক জনকে যে কোনো এক জায়গায় রাখার মনোভাব ব্যক্ত করেছেন তিনি।
জানা গেছে, আগামী দিনের বাংলাদেশের রাজনীতি ঘিরে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে তৈরি করতে চান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচনে বিশাল বিজয়কে সুসংহত, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে গতি আনা এবং সরকার ও দলের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার পরিকল্পনা তার। তাই এবারের সম্মেলনে নেতৃত্বের গুণগত পরিবর্তন আনতে চান তিনি। এ জন্য তিনি সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে দক্ষ ও পরীক্ষিত পরিচ্ছন্ন ইমেজের ব্যক্তিদের নিয়ে সংগঠনকে ঢেলে সাজাবেন। সরকারের তিন মেয়াদে যারা যোগ্যতা থাকার পরও দলের মনোনয়ন পাননি কিংবা কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই পাননি অথবা লাভজনক কোনো পদে বসতে পারেননি তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে। একইভাবে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেয়া হতে পারে তাদের, যারা নানাভাবে বিতর্কিত।
সূত্র জানায়, দলীয় কাজ আর সরকারের কাজ আলাদা করার পরিকল্পনা আছে আওয়ামী লীগের। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গত ৭ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভা নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। দলের অনেক সিনিয়র নেতা বাদ পড়েছেন। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং প্রেসিডিয়ামের ১৫ সদস্যের মধ্যে শুধু ড. আব্দুর রাজ্জাক মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন। এছাড়া চার যুগ্মসাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে ডা. দীপু মনি, ৮ সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এ কে এম এনামুল হক শামীম ও ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইন সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন ও মুন্নুজান সুফিয়ান ঠাঁই পেয়েছেন মন্ত্রিসভায়। সংরক্ষিত নারী আসনের ক্ষেত্রে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদধারীদের রাখা হয়নি। আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলেও নেতৃত্বে বড়ো পরিবর্তন আনা হবে। যারা মন্ত্রিসভায় থাকবেন তাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। আবার মন্ত্রিসভায় থাকা কাউকে দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ দিলে পরবর্তীতে তিনি মন্ত্রী থেকে বাদ পড়তে পারেন।
এদিকে সম্মেলনে প্রাধান্য পাবে নারী নেতৃত্ব। ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্বের বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে হাইকমান্ডের। এরই মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নারী নেত্রীর মাঠে রাজনৈতিক অর্জন, নেতাকর্মীদের কাছে জনপ্রিয়তা, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও কার্যক্রম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেয়া হচ্ছে। সরকারি দলের শীর্ষ নেতা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তাদের সম্পর্কে এসব ‘আমলনামা’ বা প্রতিবেদন সংগ্রহ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :