মাজহারুল ইসলাম : এক গবেষণার বরাতে শুক্রবার এমন তথ্য জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। খবরে বলা হয়, ১৯৭০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পাখির ২৯ শতাংশ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পাখির সংখ্যা এমন হারে কমে যাওয়াকে পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। জনকণ্ঠ
ওই গবেষণার তথ্য থেকে জানা যায়, প্রাণিসম্পদ কমে যাওয়ার হিসাব রাখা বেশ কঠিন। তবে পাখির ক্ষেত্রে তা তুলনামূলক সহজ। কারণ পাখিকে নির্দিষ্ট মনিটরিংয়ে রাখা সম্ভব। বিগত ৫০ বছর করা বিভিন্ন গবেষণার তথ্য এক করে বৃহস্পতিবার ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিলুপ্ত হওয়া এসব পাখিগুলোর ৯০ শতাংশ ১২টি পরিচিত প্রজাতির পাখি। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে চড়ুই, ফিঞ্চ, কোকিল, গারক, গেলা, তীরের মতো প্রজাতির পাখি। অন্যদিকে শুধু উত্তর আমেরিকার বনাঞ্চলজুড়েই বিলুপ্ত হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি পাখি। গবেষকদের মতে, এত বিপুল পরিমাণ পাখি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। এর মানে বোঝা যাচ্ছে প্রাণীদের স্বাভাবিক চক্র বিঘ্নিত হয়েছে। এর পেছনে মূল কারণ বাস্তুসংস্থানের অভাব ও খাদ্যের অভাব। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার চিত্র বলছে, পাখি বিলুপ্ত শুধু এ দুদেশেই নয়, তা বিশ্বব্যাপীই হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাখিদের বিলুপ্তির পেছনের মূল কারণ জলবায়ুর পরিবর্তন, নগরায়ণ, বনাঞ্চল ধ্বংস করা। এর দায় মানুষের। কারণ এ বিষয়ে মানুষের দায়িত্বই সবচেয়ে বেশি। কিন্তু প্রাণিচক্র রক্ষায় মানুষ যথাযথ ভূমিকা রাখছে না। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে, বাসভূমি নষ্ট, সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান নষ্ট ও কৃষিজমিতে কীটনাশক ব্যবহার করা।
এ ব্যপারে জর্জ টাউন ইউনিভার্সিটির পরিবেশ উদ্যোগের ডিরেক্টর পিটার ম্যারা বলেন, এতো পরিমাণ পাখি বিলুপ্ত হওয়া পরিবেশের জন্য বড় হুমকি। এটি বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এর ফলাফল আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাতে বাস্তুসংস্থানে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। গবেষকরা আরও বলছেন, এটি পাখি বিলুপ্তের বিষয়ই না, এতে জড়িত পুরো প্রাণিজগত। পাখি বিলুপ্তির ফলে প্রাণিজগত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমেরিকান বার্ড করজারভেন্সির প্রেসিডেন্ট মাইকেল পার বলেন, পাখিদের রক্ষায় অনেক কিছু করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু নীতিমালাও প্রণয়ন করা যেতে পারে। যাতে করে পাখি বিলুপ্ত বন্ধ করা যায়।
আপনার মতামত লিখুন :