হাসান মামুন : তার দল ন্যাপ সেভাবে অস্থিত্বশীল ছিলো না, কিন্তু তিনি ছিলেন এবং শেষদিকে এতোটা একা হয়ে পড়েছিলেন যে, পরিচিতদের ফোন দিয়ে কথা আর শেষ করতে চাইতেন না। এমন একটা অবস্থায় তাকে বেঁচে থাকতে হলো দীর্ঘদিন। আরেকটা কথা, দীর্ঘ জীবন লাভ করায় তাকে দেখে যেতে হলো স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে যে স্বপ্ন তারা দেখেছিলেন আর মানুষকে দেখাতে চেয়েছিলেন... অন্ধের মতো তার অনেকটা বিপরীত দিকে যাত্রা।
বিশ্বে সমাজতন্ত্রের পতন এবং সেসব দেশে সম্পূর্ণ নতুন এক রূপান্তরও তাকে হয়তো অনিচ্ছুকভাবে দেখতে হলো দীর্ঘদিন। তবে তার একটি উপলব্ধি তীব্রভাবে সত্য হয়ে উঠেছে... দেশে ও বিশেষত উপমহাদেশে। তাহলো ধর্মকে রাজনীতি থেকে বিযুক্ত করে চলা যাবে না, এটা বরং কঠিন ভূমিকা গ্রহণ করবে। আরাধ্য সমাজতন্ত্রে তিনি তাই ধর্মকে একটা বিশিষ্ট স্থান দিতে চেয়েছিলেন। সেই বায়ান্ন থেকে এদেশের মানুষের রাজনৈতিক মুক্তিতে তার অবদান স্মরণের বিষয় হয়ে রইলো। তাদের জীবনব্যাপী কাজের প্রভাব কতোটা টিকে আছে বা থাকলো, সে আলাপও বুঝি হতে থাকবে নতুন প্রেক্ষাপটে। একালে প্রায় সবাই যখন শুধু পেতে চায়, প্রাপ্য নয় এমন জিনিস পেতেও তদবির বা শক্তি প্রয়োগ করে নির্বিকারভাবে... তখন মোজাফ্ফর আহমদরা কীভাবে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক লাভের প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন, সে প্রশ্নও নতুন প্রজন্মের চিন্তাশীল অংশটি আশা করা যায় ভেবে দেখবে। মোজাফফর সাহেবের মতো মানুষ আমরা আর পাবো না। সমাজ ও রাজনীতিতে এমন সব মানুষের চাহিদাও খুব দুর্বল এখন। বেদনাবিদ্ধ কিছু লোকের আক্ষেপ হয়তো আছে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :