অজয় দাশগুপ্ত : কোনো এক প্রিয়া সাহা এখন টক অফ দ্যা কান্ট্রি। বলা উচিত টক অফ দ্যা বাঙালি। কে এই মহিলা? খবরে দেখলাম তিনি একসময় ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদকও ছিলেন বা আছেন এখনো। প্রশ্ন হলো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া কি সহজ? এতো সিকিউরিটি এতো নিয়ম-কানুন আর কড়া পদ্ধতির ভেতর দিয়ে কি করে তিনি এতোদূর পৌঁছালেন? এটা তো ম্যাজিক কিছু নয়। এও কি মানতে হবে যে কেউ চাইলেই যা কিছু নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব? মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যে বিষয় নির্ধারিত থাকে। এর ভেতরে হয়তো কেউ বেশি বলে কেউ কম। এই মহিলা হঠাৎ করে তার রাগ-বেদনা বা ক্ষোভ দেখিয়েছেন এমন ভাবাও অযৌক্তিক। তিনি যে একটি সংখ্যা বললেন সেটা মনগড়া হলেও এর নিশ্চয়ই পূর্ব প্রস্তুতি আছে। আমরা স্বীকার করি উপমহাদেশের তিনটি দেশে নিরবচ্ছিন্ন শান্তি নেই। গণতান্ত্রিক ভারত গান্ধীর ভারতে গরু এখন বিরাট ফ্যাক্টর। মুসলমানদের শুধু না খ্রিস্টানদেরও প্রিয় খাবারের অন্যতম হলো গরুর মাংস। অথচ বেছে বেছে মুসলমানরা হয় শিকার। বাড়িতে এমনকি পেটে গরুর গোশত থাকলেও জান যায় তাদের। পাকিস্তানের অবস্থা ভয়াবহ। সেখানে মুসলিম গোষ্ঠী দাঙ্গা নিয়মিত বিষয়। সে তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো আছে। এর মানে এই নয় যে, সাম্প্রদায়িকতা নেই। ইদানীং মৌলবাদের দাপট কমলেও সংস্কার বড় বেশি। হিন্দু ছাড়া বৌদ্ধ খ্রিস্টানরাও মাঝে মাঝে ঝামেলায় পড়েন।
রামুর ঘটনা তার প্রমাণ। কিন্তু প্রিয়া সাহা সব ফেলে খালি হিন্দুদের কথা বলেছেন। তার স্বামী নিজে একজন সরকারি কর্মকর্তা। দুদকের উপপরিচালক। এমন পদের কারও পত্নী বলছে তারা থাকতে পারছে না। এটা কেমন যেন লাগছে। মানতে হবে নানা প্রতিকূলতার পরও দেশে হিন্দুরা ভালোই আছেন। বরং বিএনপি ও বিরোধীরা রাতদিন বলছে সরকার হিন্দু তোষণ করছে। সে জায়গায় এমন একটা অভিযোগ সত্যি কেমন যেন। তবে কি এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে? যাই থাকুক না কেন তা খুঁজে বের করতে হবে। কারণ এটা স্পষ্ট দেশদ্রোহিতার শামিল। অন্য দিকে এর সুযোগে এক ধরনের মৌলবাদ ঝাঁপিয়ে পড়বে তাদের কাজে। ব্যাহত হবে শান্তি। বিপদে পড়বে কোটি সংখ্যালঘু। এই কি তার চাওয়া? এখনই এর উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। বন্ধ করতে হবে দেশের বাইরে গিয়ে দেশ ও জাতির বদনাম করা। এর ভেতর নিজেদের ছোট করার পাশাপাশি যে সর্বনাশ তার কথা খেয়াল রেখে কাজ করা উচিত। আমেরিকা নিজেই আছে ঝামেলায়। তাদের বস মানলে না মানলে এখন কোনো কিছু আসে যায় না কারও। প্রিয়া সাহার মূল মোটিভ জানাই এখন জরুরি।
আপনার মতামত লিখুন :