আমিন মুনশি : নামাজ, রোজা, জাকাতের মতো হজও একটি ফরজ বিধান। সামর্থবান মুসলমানের ওপর হজকে ফরজ করা হয়েছে। ইসলামি শরিয়ত মতে, আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের আশায় হজের নির্ধারিত সময়সীমার ভেতরে নির্দিষ্ট আমল সম্পাদনের জন্য পবিত্র ‘বাইতুল্লাহ’ জিয়ারত করাকে হজ বলে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হজ আদায় করবে এবং কোনো প্রকার অশ্লীলতা, গালমন্দ ও ফাসেকি কাজে লিপ্ত হবে না, সে ব্যক্তি হজ পালন শেষে এমনিভাবে বাড়ি ফিরবে, যেভাবে সে মায়ের পেট থেকে নিষ্পাপ অবস্থায় দুনিয়াতে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল।’ (বুখারি শরিফ) নবীজি আরো বলেন, ‘যে অবহেলা করে ফরজ হজ ত্যাগ করে, আমি জানিনা তার মৃত্যু ঈমানের ওপর হবে কি-না।’ (বুখারি শরিফ)
হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি হওয়ায় হজের গুরুত্ব অপরিসীম। হজের গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, ‘যখন আমি ইব্রাহিমকে (আ.) বাইতুল্লাহর স্থান ঠিক করে দিয়ে বলেছিলাম যে, আমার সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না এবং আমার গৃহকে পবিত্র রাখো তাওয়াফকারীদের জন্য। আর মানুষের মধ্যে তুমি হজের ঘোষণা প্রচার করো, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে, উটে চড়ে এবং সর্বপ্রকার বাহনে সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে।’ (সূরা হজ : ২৬-২৭)
মহানবী (সা.) এরূপ বলেন যে, ‘তোমরা বেশি বেশি হজ এবং ওমরা পালন করো, কেননা এর দ্বারা দারিদ্র্য দূরীভূত হয় এবং গুনাহ মাফ হয়।’ (নাসাঈ শরিফ) রাসূলে কারিম (সা.) আরও এরশাদ করেন, ‘হাশরের ময়দানে আলাহ তায়ালা ‘হাজরে আসওয়াদ’কে এ অবস্থায় ওঠাবেন যে, তার দুটি চোখ থাকবে, সে দেখবে এবং তার মুখ হবে; সে কথা বলবে, সে তার মুখ দিয়ে এসব লোকের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে যারা ঈমান, ইয়াকিন ও ইখলাসের সঙ্গে হাজরে আসওয়াদে চুমু খেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘হাজরে আসওয়াদ এবং মাকামে ইব্রাহিম হলো জান্নাতের দুটি ইয়াকুত পাথর। কাফির, মুশরিকরা যদি স্পর্শ না করত, তাহলে যেকোনো কঠিন রোগী তাতে স্পর্শ করলে আরোগ্য লাভ করতো।’ (তিরমিজি শরিফ) অন্যত্র প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘হাজিগণের সুপারিশে মহান আল্লাহ তায়ালা অন্তত চারশ’ পরিবারকে ক্ষমা করে দিবেন।’ (তারগিব, তিবরানি-মাআরেফ)