মাজহারুল ইসলাম : সারা দেশে ১২ দিনে এক হাজার ৬৪৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। দেশের অর্ধশত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর এ পরিসংখ্যান। এর বাইরে রাজধানীসহ সারা দেশে ঠিক কতজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে তার কোন সঠিক হিসাব নেই। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। যুগান্তর
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৫০ ভাগ সাধারণ ও মারাত্মক ধরনের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হবার ঝুঁকিতে রয়েছেন। প্রতিবছর কমপক্ষে ৫ লাখ মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে বছরে ২২ হাজার ডেঙ্গু রোগী মারা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুহার প্রতিবছর বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরা, বরফ গলা ও সুনামিসহ ঝড় হচ্ছে। এতে বহু মানুষ খোলামেলা স্থানে বসবাস করতে বাধ্য হয় এবং মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ জলবায়ু পরিবর্তন।
গত দুই দশকে ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশার কামড়ে ২৯৯ মারা যায়। সরকারি হিসাবে এ সময়কালে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৫৩ হাজার রোগি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে মশার প্রজনন দ্রুত বেড়ে যায় এবং মহিলা (ফিমেইল) মশার কার্যকারিতা বাড়ে। মশার সংক্রমণ হওয়ার জন্য যে ইউকিউবিশন সময় প্রয়োজন হয় তা কমে যায়। আগে যেসব জায়গায় মশা থাকতে পারত না তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সেসব জায়গায় অবস্থান করতে পারে। বিশেষ করে বৃষ্টির পানি ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন পাত্রে জমিয়ে রাখার কারণে এডিশ মশার প্রজনন বাড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ডেঙ্গু জ্বরে ৪৬ হাজার আক্রান্ত ও ৭৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে। একই সময়ে ফিলিপাইনে ৭২ হাজার আক্রান্ত ও ৩০৩ জনের মৃত্যু। সিঙ্গাপুরে ৩ হাজার ২৩৩ জন আক্রান্ত। ভিয়েতনামে ৬০ হাজার আক্রান্ত ও ৪জনের মৃত্যু এবং ভারতে ৬ হাজার ৮০৭ জন আক্রান্ত ও ৭ জনের মৃত্যু। মিয়ানমারে ৪ হাজার আক্রান্ত ও ১৪ জনের মৃত্যু এবং থাইল্যান্ডে ২৬ হাজার আক্রান্ত ও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের কারণে জয়বায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। যার প্রভাবে বাংলাদেশের তাপমাত্রা ও বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ছে। কখনও খরা, আবার কখনও বা অতিবৃষ্টির ফলে ডেঙ্গু মশার প্রকোপ বেড়েছে।