জাহিদুল কবীর মিল্টন, যশোর : যশোর কিংস হাসপাতালে এক প্রসূতির সিজার করার সময় গর্ভের সন্তানের মাথা কেটে ফেলেছেন ডা: আতিকুর রহমান। ঘটনার দুইদিন পর শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে যশোর আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যশোর সদরের সতীঘাটা পান্থাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ইকরাম হোসেনের গর্ভবতী স্ত্রী নাজনীন নাহার ১০ জুলাই বুধবার সন্ধ্যায় ভর্তি হন ডা: আতিকুর রহমানের মালিকানাধীন কিংস হাসপাতালে।
শিশুটির পিতা ইকরাম হোসেন জানান, ভর্তির পরপরই পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ডা. আতিকুর রহমান তাঁর স্ত্রীর অপারেশন করেন। অপারেশন করার সময় গর্ভে থাকা শিশুটির মাথায় অপারেশন কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রের পোঁচ লাগে। মাথার তালুতে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
প্রসূতির স্বজনরা ভূমিষ্ঠ শিশুর মাথায় রক্ত দেখে একটু উত্তেজিত হয়ে উঠলে, ডা. আতিক তাদের ধমক দিয়ে বলেন, এটা কিছু না, সামান্য ব্যাপার। নখের আচঁড়। ওই অবস্থায় দুইদিন তার হাসপাতালে রেখে দেন শিশুটিকে। আলাদা কোনো চিকিৎসা দেয়া বা বিষেশজ্ঞ ডাক্তারও দেখানো হয়নি।
শিশুটির পিতা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে খাওয়া ছেড়ে দিলে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তখনও কিংস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই শিশুটি চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং শুক্রবার (১২ জুলাই) সকালে কিংস কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে শিশুটি ও তার মাকে ডিসচার্জ করে দেবার চেষ্টা করে। শিশুর অবস্থা অবনতি হওয়ায় শিশুর পিতা শুক্রবার সকাল ১০টায় যশোর আড়াইশ’শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
যশোর আড়াইশ’শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কাজল মল্লিক জানান, শিশুটির মাথা কাটা রয়েছে। কী কারণে কাটা হয়েছে, তা জানি না।
এ ব্যাপারে ডা. আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এটা তেমন কোনো বড় ঘটনা না। এটা অপারেশনের সময় হতেই পারে।
প্রসঙ্গত: ডা: আতিকুর রহমান গাইনী বিশেষজ্ঞ নন। তিনি ছিলেন যশোর আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালের একজন মেডিকেল অফিসার।
এর আগে এই কিংস হাসপাতালেই গত ১লা জুলাই ডাক্তার সাদিয়ে শাহিন পাইলসের অপারেশন করতে যেয়ে সদর উপজেলা কাশিমপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের স্ত্রী সায়রা বেগমের জরায়ু কেটে বাদ দেন। এই ঘটনায় যশোরের সিভিল সার্জন তিন সদস্যসের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেবার কথা থাকলেও এখনও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি।
সম্পাদনা : মিঠুন রাকসাম