ডেস্ক রিপোর্ট : মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার গেটে পায়ে ইনফেকশন নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে পড়েছিলেন অহিদ নামে এক প্রতিবন্ধী (পাগল)। পায়ে পচন ধরায় গন্ধে কেউ তার কাছে যেতে পারতো না। যুগান্তর
অভুক্ত অবস্থায় দিন দিন সে নুয়ে পরছিল। শ্রীনগর থানায় যাতায়াতের সময় প্রতিদিনই তা বিভিন্ন জনের চোখে পরতো কিন্তু কেউ তার সামনে যেত না।
বিষয়টি নাড়া দেয় একই পথে যাতায়াতকারী শ্রীনগর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি মো. আওলাদ হোসেনকে। তিনি ওই পাগল অহিদকে কয়েক বেলা খাবার ও পানীয়ের যোগান দেন। চিকিৎসার জন্য বিষয়টি তুলে ধরেন শ্রীনগর থানার ওসি মো. ইউনুছ আলীর কাছে।
তিনি বিষয়টি নিয়ে ওসি মো. ইউনুছ আলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ রেজাউল ইসলামের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। একটু সুস্থ হয়ে ওই প্রতিবন্ধী জানান, তার নাম অহিদ। তার বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বালাখাল গ্রামে। পরক্ষণেই আবার অন্য ঠিকানার কথা বলেন।
ঠিকানা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আওলাদ হোসেন যুগান্তরের সাবেক সিনিয়র রিপোর্টার আলাউদ্দিন আরিফের সহায়তায় হাজীগঞ্জের সমকাল প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সমকাল প্রতিনিধি মো. কামাল হোসেন খোঁজ নিয়ে অহিদের ভাইবোনদের মোবাইল ফোন নাম্বার দেন।
পরে অহিদের বোনের স্বামী তাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আওলাদ হোসেন।
তাজুল ইসলাম জানান, অহিদের ঘরে ৭ বছরের এক ছেলে ও ৫ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। অহিদের স্ত্রী সংসার ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলে অহিদ পাগল হয়ে যায়। ৩ বছর আগে হঠাৎই এলাকা থেকে উধাও হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে আমরা তাকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেই।
শনিবার সকালে অহিদের বোন ও তাজুল ইসলাম শ্রীনগর এসে অহিদকে শনাক্ত করেন। অহিদ তার পরিবারের লোকজনকে দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পরেন। বোনকে ডেকে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমাকে নিয়ে যাও।
অহিদকে চাঁদপুর নিয়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিক আওলাদ হোসেন, মো. আরিফ হোসেন, রেজাউল করিম রয়েল ও ব্যবসায়ী জনিসহ কয়েকজনের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা তুলে দেন শ্রীনগর থানার ওসি মো. ইউনুছ আলী।