মুসবা তিন্নি : জোনাকিদের স্কুল, রাতের আঁধারে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে একত্রিত হয় জোনাকিরা। শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া রোধে গাইবান্ধার ফুলছড়িতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে এই স্কুল গড়েছেন এক নৈশ প্রহরী। গেলো একযুগে যে মানুষটির কাছে শিক্ষা নিয়েছে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী।
সন্ধ্যা হলেই জোনাকির মতো জ্বলে ওঠে আলো। নিজেদের মধ্যে সেই আলো ভাগাভাগি করতে একটুও কার্পণ্য নেই। এরই মধ্যে শুরু হয় আলোর ফেরিওয়ালা শাহ্ আলম সুরুজের পাঠদান। ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বাউশি গ্রামে এক যুগ ধরে শিশুদের মধ্যে আলো ছড়াচ্ছেন তিনি। একটু একটু করে ভিত্তি গড়ছে নদীভাঙা পরিবারের এই শিশুরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমার আব্বু আম্মু কেউ পড়তে পারে না এবং পড়াতেও পারে না তাই এখানে পড়তে আসি, কোচিং এ গেলে টাকা নেয় এখানে কোনো টাকা লাগে না। মাধ্যমিকের গ-ি পেরুতে না পারার আক্ষেপ থেকে এলাকায় শিক্ষার আলো বিস্তারের এই উদ্যোগ নেন স্থানীয় কলেজের নৈশ প্রহরী শাহ আলম। তার স্বপ্নের সারথি হয়ে পাশে দাঁড়ান এলাকার শিক্ষিত তরুণরা। গাইবান্ধার ফুলছড়ি পথের আলো প্রতিষ্ঠাতা শাহ্ আলম সুরুজ বলেন, ‘আমরা এখানে পাঁচজন টিচার এবং একজন সহকারী একজন টিচার রয়েছি। তারা সবাই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে। ২০০৮ সালে সেবা শিক্ষালয় নামে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বাউশি গ্রামে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে পথের আলো নামকরণ করা হয়। শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া রোধে সুরুজের এই পাঠশালা প্রশংসনীয় জানিয়ে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, তাদের সাহায্য সহযোগিতা লাগলে জেলা প্রশাসক থেকে করা হবে।
ইউনিসেফের তথ্য মতে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার ৬৭ দশমিক ৫ ভাগ। আর ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সের ৬ দশমিক ৭ ভাগ শিশু পড়ালেখা করে না।
আপনার মতামত লিখুন :