শিরোনাম

প্রকাশিত : ২০ জুন, ২০১৯, ১২:২৩ দুপুর
আপডেট : ২০ জুন, ২০১৯, ১২:২৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাবেক এমপি রানার জামিন গুঞ্জন; জেল চত্বরে অনুসারীদের ভীড়

অলক কুমার দাস, টাঙ্গাইল : যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার স্থায়ী জামিন গুঞ্জন উঠেছে টাঙ্গাইলে। এর ফলে টাঙ্গাইলে সাবেক এমপি রানার অনুসারীদের ভীড় দেখা গেছে টাঙ্গাইল জেলগেটে। বুধবার (১৯ জুন) টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের সামনে এই দৃশ্য দেখা যায়। এর ফলে শহরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।

আগামী ২০ জুন এমপি রানার হাজিরার তারিখ থাকায় তাকে একদিন আগেই (১৯ জুন) সকালে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয় কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ। আর এই সংবাদ অনুসারীদের কাছে জামিন হয়েছে বলে গুঞ্জন তৈরি হয়। ফলে এইদিন সকাল থেকেই এমপি রানার অনুসারীরা দলে দলে উপস্থিত হতে থাকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের সামনে। এক পর্যায়ে প্রচুর নেতাকর্মী, ভক্ত-অনুসারীর সমাগম ঘটে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের সামনে।

আইন-শৃঙ্খলা অবনতির বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো প্রকার আশঙ্কা করছি না। তারপরও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যেন কোনো মহল কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে।

সাবেক এমপি রানার জামিনের বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমাদের কাছে জামিনের কোনো কাগজ আসেনি। আগামী কাল (২০ জুন) উনার হাজিরা আছে, সেজন্য উনাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় ১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সাবেক এমপি রানার জামিন বহাল রাখেন। এখন এ রায়ের ফলে কারাগার থেকে রানার মুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার (১৯ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করে এ রায় দেন।

আদালতে আজ বুধবার (১৯ জুন) আমানুর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট রুশো মোস্তফা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।

আইনজীবী রুশো মোস্তাফা বলেন, গত ৬ মার্চ যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় রানাকে ৬ মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ওই জামিন স্থগিত করে হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তি করার জন্য নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তারা সাংসদ আমানুরের দিকনির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
আমানুর রহমান খান রানা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলারও আসামি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়