শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৪ জুন, ২০১৯, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ০৪ জুন, ২০১৯, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমি চার-পাঁচ লাইনে তারেক রহমানের রাজনৈতিক ফিলোসফির সামারি করতে চাই

জিয়া হাসান : তারেক রহমানের রাজনৈতিক ফিলোসফি নিয়ে দিস্তা দিস্তা কাগজে চার-পাঁচ আঙ্গুল মোটা বই লেখা হয়েছে। আমি তার রাজনৈতিক ফিলোসফি চার-পাঁচ লাইনে সামারি করতে চাই। প্রত্যেক মানুষের চিন্তার তিনটা লেভেল আছে। ১. ক্রিটিক্যাল। ২. কমন সেন্স। ৩. আন ক্রিটিক্যাল বা খারাপভাবে বলতে গেলে ‘নির্বোধ’। কোন মানুষ কোন ইস্যুতে চিন্তার কোন লেভেলে থাকবে এটা নির্ভর করে ওই লেভেলে অপারেট করতে তার ইনসেন্টিভের উপরে। যেমন মনে করেন আমি জানি আমি যদি ইল্লজিক্যাল কিছু বলি আমাকে আমার অনেক ক্রিটিকাল মাইন্ডেড বন্ধু টুকলিফাই করবে। সো আমার ইনসেন্টিভ হচ্ছে, বিভিন্ন জিনিসকে একটু ক্রিটিক্যালি দেখা যেহেতু ভুল কিছু বললে একটা মোটামুটি ক্রিটিক্যাল ফ্রেন্ড সার্কেলের কাছে আমার গাল খেতে হয়।

অন্যদিকে তারেক রহমান সাহেবের বিশাল একটা আনক্রিটিক্যাল ভক্ত শ্রেণি রয়েছে। এটা একটু হিউজ নম্বর। কোটির ঘরে । মিডনাইট ইলেকশনে ভোট দিতে ব্যর্থ হওয়া সারাদেশের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে বেঈমানি করে বিএনপিকে সংসদে পাঠিয়ে আওয়ামী লীগের এই অবৈধ সরকারকে বৈধতা দেয়ার এই গাদ্দারী সিদ্ধান্ত নেয়ার পরেও এরা চিন্তা করে... উনি বুঝদারি মানুষ, হাই লেভেল মানুষ, দেশের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনেতা... তার এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোথাও নিশ্চয়ই কোনো জাস্টিফিকেশন আছে যেটা আমি জানি না। তাই উনি যা চিন্তা করছে সেটা ঠিক ঠিক ঠিক। আমি একাডেমিক ইন্টারেস্ট নিয়ে লন্ডনে উনার কিছু ভাষণ ইউটিউবে দেখছি। সেই ভাষণগুলোর একটা ওয়াজ মাহফিল চরিত্র আছে। উনি একটা কিছু বলেন, তারপরে অডিয়েন্স বলে ঠিক ঠিক ঠিক। আমার লাইফে আমি রাজনৈতিক সভাতে এই ধরনের ওয়াজ মাহফিল টাইপের ঠিক ঠিক ঠিক অ্যাপ্রোচ দেখিনি। এখন আমি ওয়াজ মাহফিলকে ছোট করতেছি না। কিন্তু আমরা এটা জানি যে আমাদের জনপ্রিয় ওয়াজ মাহফিলগুলোতে সমাজ সম্পর্কে বয়ানের একটা অন ক্রিটিক্যাল অ্যাপ্রোচ আছে... যেখানে হুজুর যা বলবেন তা ভক্তকুলের জন্য ঠিক ঠিক ঠিক।তারেক রহমান সাহেব এই বিশাল অডিয়েন্স পেয়ে গেছেন এবং তার আর ইনসেন্টিভ নেই কমনসেন্স বা ক্রিটিক্যাল লেভেলে অপারেট করার। এজন্য উনি খুব স্টুপিড কিছু ডিসিশন নিতে পারেন, কারণ তিনি জানেন তার এই বিশাল বড় আন ক্রিটিক্যাল ভক্তকুল তা জাস্টিফাই করবে।

আমার ধারণা আমাদের দেশের পাওয়ারের মূল সোর্স আরবান মিডল ক্লাস কমনসেন্স অরিয়েন্টেড। তারা যেকোনো বিষয়কে আন ক্রিটিক্যালি দেখে না কমনসেন্স দিয়ে জাস্টিফাই করে অন্যদিকে হাই মাইন্ডেড কমপ্লেক্স আইডিয়া এবং ন্যারেটিভ পছন্দ করে না। যেকোনো পলিটিক্যাল লিডারের এই কমনসেন্স লেভেলে অপারেট করা উচিত। কিন্তু তারেক সাহেব এখন এই শ্রেণির আর ভ্যালিডেশন চান না, কারণ তিনি তার অন ক্রিটিক্যাল ঠিক ঠিক ঠিক ভক্তকুল পেয়ে গেছেন। তার ইনসেন্টিভ হচ্ছে এই ভক্তকুলকে স্যাটিসফাই করা  এবং এটা একটা ট্রাপ, কারণ তিনি চাইলেও এদের চিন্তার, সিম্পল ন্যারেটিভে, গ্রুপ থিংকিং এবং বিশ্বাসগুলোর বাইরে উনি যেতে পারবেন না। গেলে এরাই আবার তাকে গাল দেবে। ফলে একদিকে যেমন তিনি যা ইচ্ছা তা করে এ ভক্তকুলের কারণে পার হয়ে যেতে পারেন অন্যদিকে তাকে এই অন ক্রিটিক্যাল ভক্তকুলের চিন্তা কাঠামো এবং বিশ্বাস কাঠামোর মধ্যেই অপারেট করতে হয়। এটা বিএনপির বর্তমান অধঃপতনের অন্যতম প্রধান একটা কারণ। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়