রাসেল পারভেজ : কোনো এক সুন্দর সকালে শুঁয়াপোকা থেকে প্রজাপতি হওয়ার মতো একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ আত্মঘাতী জঙ্গিতে রূপান্তরিত হয় না, রূপান্তরের প্রক্রিয়াটা ধারাবাহিক। আপাত অগ্রাহ্য নিরীহ দর্শন ছোট ছোট আচরণ সংশোধনের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে পরিবর্তনের দিকে ঠেলে দেয়। পারিবারিক সংস্কার, ব্যক্তিগত অনীহা, নিজস্ব জীবনদর্শন, প্রাথমিক পর্যায়ে অসংখ্য ব্যক্তিগত বাধা থাকে এবং একইসঙ্গে নিজেকে শুদ্ধ করে তোলার তাগিদ। এই লড়াইয়ে যদি আচরণ সংশোধনের আগ্রহ্যটুকু জিতে যায়... পরবর্তী সময়ে বড় বড় সংস্কারগুলো নির্দ্বিধায় মেনে নেয় মানুষ। যে মানুষটা জিন্স ছাড়া প্যান্ট পরেনি, যে মানুষটা পপ-রক-ডিসকোর বাইরে কিছু শুনে স্বস্তি পায়নি, সে মানুষটাই কিছুটা আরামের জন্য ঢোলা প্যান্ট হয়ে টাকনুর উপরে পাজামাতে চলে যায় সাড়ে ৬ মাসেই। সে মানুষটাই সুরে-সংগীতে বেদআত খুঁজে পায়।
তাদের ধারাবাহিক পরিবর্তনের প্রথম অংশটা পারিবারিকভাবেই উদযাপিত হয়। অপসংস্কৃতি থেকে কিছুটা ইসলামমনস্ক সংস্কৃতি যাপনের উদযাপনের পরবর্তী পীড়াটুকুও পরিবারকেই বহন করতে হয়। চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ার পরে ভিন্ন একটা লড়াই শুরু হয় পরিবারের ভেতরেই। বেদআত থেকে রক্ষাকারী টাকনুর উপরে পাজামা পরা ভাইটির সঙ্গে ধর্মাচার, সম্বোধন এবং জীবনাচরণ নিয়ে পরিবারের অন্যদের সার্বক্ষণিক সংঘাতের দু’টো গন্তব্যই বাকি থাকে... সপরিবারের প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে যাওয়া কিংবা পরিবারকে বদলাতে ব্যর্থ হয়ে প্রতিক্রিয়াশীল ভাইটির গৃহত্যাগ, প্রতিক্রিয়াশীল, উগ্রবাদী হয়ে উঠার জন্য ব্যক্তিগত হতাশা, বিষণœতা, বিপন্নতা কিংবা বন্ধুর অভাব... অসংখ্য উদ্দীপক থাকতে পারে... তবে একবার প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে যাওয়ার পর সব মতাদর্শের প্রতিক্রিয়াশীলরাই পরস্পরের মানসিক সঙ্গী। ভিন্ন ভিন্ন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিশ্বাস ধারণ করে তারা পাশাপাশি বসে স্লোগান দিচ্ছে... তাদের নির্ধারিত পথ মেনে না চলার জন্যই সমাজে এতো দুর্দশা। তাদের আক্ষেপ জানানোর জন্য এসব প্রতিক্রিয়াশীল মানুষেরা পরস্পরকে হত্যা করার বদলে খুঁজে খুঁজে সাধারণ মানুষকেই খুন করছে । ফেসবুক থেকে