নিউজ ডেস্ক : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দিন দিন বেড়েই চলেছে বিভিন্ন মানি চেঞ্জার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ উঠেছে, বিমানবন্দরের স্পর্শকাতর কাস্টমস এবং বহির্গমন ইমিগ্রেশন এলাকায় গড়ে ওঠা আটটি মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তিনটিই অবৈধ। সেগুলো হচ্ছে- এভিয়া, এইচ এস ও বিজয় মানি চেঞ্জার। বিমানবন্দরে মুদ্রা কেনাবেচায় এসব মানি চেঞ্জার কর্মীর বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন সংশ্নিষ্ট মানি চেঞ্জার কর্মীরা। সমকাল।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে বিমানবন্দরের জন্য রামাদা, ইম্পেরিয়াল, রিলায়েবল, জেনি ও স্টার মানি চেঞ্জারের নাম থাকলেও ওই তিনটির নাম নেই। এ ছাড়া রাজধানীতে এসব মানি চেঞ্জারের একাধিক শাখা ও ঠিকানা রয়েছে। বিমানবন্দরের স্পর্শকাতর এলাকায় এসব মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের এক শ্রেণির কর্মীর ডাক-চিৎকারে আতঙ্কিত হন বিমান যাত্রীরা। বৈদেশিক মুদ্রা ভাঙাতেও প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানান অনেক যাত্রী। সম্প্রতি বিমানবন্দরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বিভিন্ন মানি চেঞ্জার কর্মীকে জরিমানা করার পর বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচায় ডাক-চিৎকার কিছু দিনের জন্য বন্ধ হয়। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই তা আবার একই চিত্রে ফিরে এসেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মাদ খুরশিদ ওহাব বলেন, কোনো মানি চেঞ্জারের একাধিক ঠিকানা বা শাখা থাকা অবৈধ। বিমানবন্দরে নিবন্ধনকৃত মানি চেঞ্জারগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। কিন্তু ওই ওয়েবসাইটের ব্যবস্থা বাইরে বিমানবন্দরে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থাকা অবৈধ। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুরশিদ ওহাব আরও জানান, বিমানবন্দরে মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে প্রতি বছর অডিট করা হলেও মাসওয়ারি কোনো তদারকি করা হয় না। তবে কোনো মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মুদ্রা কেনাবেচা বা বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন ঠিকানায় অবস্থিত বিমানবন্দরের মানি চেঞ্জারগুলোর মধ্যে রয়েছে মতিঝিলে এভিয়া ও বিজয়, উত্তরায়-রামাদা, এইচ এস ও স্টার, গুলশানে ইম্পেরিয়াল ও জেনি, মিরপুরে রিলায়েবল। এসব মানি চেঞ্জারের নির্দিষ্ট ঠিকানা থাকা সত্ত্বেও তারা বিমানবন্দরে বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার জন্য ভুয়া নিবন্ধন দেখিয়ে সিভিল এভিয়েশনের কাছ থেকে জায়গা বরাদ্দ নেয়। ঘটনার সঙ্গে সিভিল এভিয়েশনের সংশ্নিষ্ট বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশনের পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, বিমানবন্দরের প্রবেশ কাস্টমস হলে সাতটি এবং বহির্গমন ইমিগ্রেশন হলে একটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বিমানবন্দরে বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবন্ধনকৃত কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তাদের নামে ওই জায়গা বরাদ্দ দেয়। তবে মুদ্রা কেনাবেচায় তাদের অনিয়মের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্নিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার।
অভিযোগের বিষয়ে এভিয়া ও রামাদা মানি চেঞ্জারের ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম বলেন, বিমানবন্দরে মুদ্রা কেনাবেচার ক্ষেত্রে অনিয়ম নেই। বিদেশে টাকা পাচারেরও কোনো ঘটনা নেই। ডাক-চিৎকার করে যাত্রীদের কাছ থেকে মুদ্রা কেনাবেচার অভিযোগও ভিত্তিহীন।