স্বপ্না চক্রবর্তী : প্রতিবছরের মতো এ বছরও ট্রেনের টিকিটের জন্য যাতে যাত্রীদের দিনের পর দিন লাইনে দাঁড়িয়ে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেজন্য এ বছর আলাদা আলাদা ৫টি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করছে রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শুধুমাত্র বিষয়টি না জানার কারণেই কমলাপুর, বিমানবন্দর রেলস্টেশনগুলোতে উপচে পড়া ভিড় হলেও অবসর সময় পার করছেন অন্য কাউন্টারের কর্মকর্তারা। এমনকি যাত্রীর অভাবে ফিরত যাচ্ছে রাজধানীর ফুলবাড়িয়া কাউন্টারের টিকিট। ফলে এই কাউন্টারে ৭টি ট্রেনের জন্য বরাদ্দ থাকা ৪ হাজার ৫৪৮ টি টিকেটের মধ্যে ২ হাজার ২৭৪টি টিকেট ফেরত যাচ্ছে। বাকিগুলো অনলাইনে বিক্রির জন্য নির্ধারিত।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের জানায়, লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহে ভোগান্তির কথা চিন্তা করে এ বছর থেকে ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি ও রাজধানী ৫টি স্থান থেকে টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ফুলবাড়িয়া কাউন্টার থেকে শুধুমাত্র সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্ত:নগর ট্রেনের টিকি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কাউন্টারটিতে টিকেট বিক্রির জন্য তিনটি বুথ থাকলেও টিকিট-প্রত্যাশীদের দেখা যায়নি। অফিসের ভেতরে তিনটি কম্পিউটারে টিকেট মাস্টাররা বসে। দীর্ঘক্ষণ পর দুই একজন করে যাত্রী এলে তাদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। লাইনে দাঁড়ানো টিকেট প্রত্যাশীদের মাঝে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পর্যাপ্ত রেলওয়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকলেও তারা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
এবার ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকেটের জন্য রাজধানীর কমলাপুর, তেজগাঁও, বনানী, বিমানবন্দর ও ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনে বসানো হয়েছে আলাদা কাউন্টার। ফলে প্রতিবারের মতো এবার নেই যাত্রীদের তেমন কোনো দুর্ভোগ। তবে অধিকাংশ যাত্রী নির্ধারিত স্টেশন সম্পর্কে অবহিত না হওয়া ভিড় করছেন কমলাপুর রেল স্টেশনেই। শেষপর্যন্ত সেখান থেকে ফিরেও আসছেন যাত্রীরা। কারণ এবারের ট্রেনের টিকিট নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য নির্দিষ্ট স্টেশন নির্ধারিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রেলওয়ের পরিবহন পরিদর্শক তওফিকুল আজিম বলেন, অন্য কাউন্টারগুলোতে যাত্রীর উপস্থিতি কম। যেই আসছে সেই টিকিট পাচ্ছে। বিষয়টা এবছরই যেহেতু শুরু তাই আগামীবছরগুলোতে এ সমস্যা থাকবে না বলে আমাদের মনে হচ্ছে। তিনি জানান, এবার ঈদ যাত্রায় রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, পঞ্চগড়, চিলাহাটি, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ ও ঈশ্বরদীসহ পুরো পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া কমলাপুর স্টেশন থেকে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী ট্রেনের টিকিট মিলবে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে। ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট মিলবে তেজগাঁও রেল স্টেশন থেকে। নেত্রকোনাগামী ট্রেনের টিকিট মিলবে বনানী স্টেশন এবং সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব ট্রেনের টিকিট মিলবে ফুলবাড়িয়া রেল স্টেশন থেকে।