লিহান লিমা: ব্রেক্সিট নিয়ে কোন চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারায় পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর তিনটায় ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন থেরেসা। ৭ জুন কনজারভেটিভ দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অব্যাহতি নেবেন থেরেসা। ১০ জুন থেকে শুরু হবে থেরেসার পরবর্তী উত্তরসূরী খোঁজার সন্ধান। বিবিসি, সিএনএন, ডেইলি মেইল
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে থেরেসা বলেন, ‘ব্রেক্সিট গণভোটে আমাদের দেশের অসীম পরিবর্তনের আহ্বান ছিল। ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার গণভোটের ফলাফল অনুযায়ী আমি ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এমপিদের ব্রেক্সিট চুক্তিতে ঐক্যমতে আনতে আমি আমার পক্ষে যতটা করা যায় করেছি। তিন বার চেষ্টা করেছি। এখন মনে হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থে নতুন প্রধানমন্ত্রীর বিষয়টি এগিয়ে নেয়া উচিত।’ এই সময় তিনি ব্রিটেনকে একটি সফল ব্রেক্সিট প্রস্তাবনা দিতে না পারায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে থেরেসা আরো বলেন, ‘আমি দেশের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু শেষ নই৷ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন, নিজের প্রিয় দেশের জন্য কাজ করতে পারা৷’ ভাষণ শেষ না হতেই অশ্রুসজল চোখে দ্রুত ডাউনিং স্ট্রিটের ভেতরে চলে যান থেরেসা। শুক্রবার সকালে কনজারভেটিভ পার্টির ‘১৯২২ কমিটির’ প্রধান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডির সঙ্গে সাক্ষাতের পর পদত্যাগের দিনক্ষণ ঠিক করে এই বক্তব্য দেন তিনি৷
থেরেসার পদত্যাগের পর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘কনজারভেটিভ দল ও দেশকে যে সেবা দিয়েছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। সময় এখন ব্রেক্সিটকে এগিয়ে নেয়ার।’ লেবার নেতা জেরেমি করবিন বলেন, ‘পদত্যাগ করে সঠিক কাজটিই করেছেন থেরেসা। তিনি সঠিক দিক-নির্দেশনা দিতে পারছিলেন না। নতুন টোরি নেতার উচিত হবে সাধারণ নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে দেশের ভাগ্য নির্ধারণী সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়া।’ সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সাহসী ও দৃঢ় বিদায়ী ভাষণের জন্য থেরেসার প্রশংসা করেন। ক্যামেরুন বলেন, ‘আমি জানি এই সময় কতটা কষ্টের। দেশের জন্য তিনি যে চেষ্টা চালিয়েছেন তার জন্য তার ধন্যবাদ প্রাপ্য।’
জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত তিন বার ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার থেরেসার ব্রেক্সিট প্রস্তাবনা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হয়। আগামী জুনের শুরুতে চতুর্থবারের মতো ব্রেক্সিট প্রস্তাবনা তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন থেরেসা। তবে লেবার দলের সঙ্গে সমঝোতা ভেস্তে যাওয়া সহ, নিজ দলের এমপিরাই থেরেসার নতুন চুক্তিকে প্রবলভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। থেরেসার ওপর পদত্যাগের তীব্র চাপ আসে।
আপনার মতামত লিখুন :