অর্চিতা বাড়ৈ : কোন কুক্ষণে যে ঢাকা ইউনিভার্সিটির ডিগ্রির খায়েশ হইসিলো! যার জন্য এখনো ভুগতে হচ্ছে। না ঢাকা ইউনিভার্সিটির পড়াশোনার মান নিয়ে আমি কোনো প্রশ্ন তুলছিনা। সমস্যা হচ্ছে এর প্রাগৈতিহাসিক আমলাতান্ত্রিক জটিলতাওয়ালা সিস্টেম নিয়ে। এই যুগে এসেও যাদের কোনো ডাটা কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে সংরক্ষণ হয় না। একটা মিনিমাম মার্কশিট, সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে কয়েকমাস লেগে যায়। কয়েক জায়গায় ঘুরতে হয়, কয়েকদিন ঘুরতে হয়। আর প্রতি জায়গায় আলাদা করে টাকা! প্রতিবারই একই মান্ধাতার আমলের ফর্ম ফিলাপ করতে হবে। কিন্তু আমার সব ইনফরমেশন তো তাদের ডাটা ব্যাংকে থাকা উচিত। প্রতিবার আমার ন্যাশনাল আইডি নম্বর, স্থায়ী ঠিকানা কি কাজে লাগে আমি জানি না। কোনো সার্টিফিকেটে সেগুলার উল্লেখও থাকে না।
ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে সব মার্কশিট তুলতে হবে। মার্কশিট তোলার ওইখানে সব ইনফরমেশন আবার আমাকেই লিখতে হবে। কতো সিজিপিএ, কতো তারিখ ফল প্রকাশ হইসে। অথচ এগুলা সবই তাদের ডাটা সার্ভিসে থাকা উচিত। শুধু আমার নাম আর আমার রোলটাই তো আমার পরিচিতি হওয়া উচিত। জাস্ট সার্চ দিয়ে ডাটা সার্ভিস থেকে আমার মার্কশিট বের হয়ে আসার কথা। দুইশো টাকার জায়গায় দরকার হলে দুই হাজার টাকা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে এই মার্কশিট প্রোভাইড করতে পারার কথা। এখনো সব কিছু ফাইলবন্দি অবস্থায় থাকে। ফাইল খুঁজে খুঁজে তথ্য জোগাড় করে তবেই তারা আমাকে দিতে পারবে আমার কাক্সিক্ষত মার্কশিট। এরপর তো আছে আজব মধ্যস্বত্বভোগী হল সিস্টেম। সারাবছর আমার হলের সঙ্গে কোনো কানেকশন নেই কিন্তু কোনো অফিসিয়াল কাজে মাঝখানে মিডলম্যান থাকবে স্টুডেন্টের হল। কেন? কি কাজ ওদের স্টুডেন্টের রেজাল্টের সঙ্গে?
এতো জঘন্য আমলাতান্ত্রিক সিস্টেম নিয়ে আগামী একশো বছরেও জীবনে নরমালি কোনো র্যাংকিংয়ে আসতে পারবে না ঢাকা ইউনিভার্সিটি এবং এর মতো আমলাতান্ত্রিক জটিলতাওয়ালা পাবলিক ইউনিভার্সিটিগুলো বাংলাদেশের, যদি না ঘুষ না দিয়ে পায় আর কি র্যাংকিং! এবং আমি শিওর ঢাকা ইউনিভার্সিটি জন্মের সময় থেকেই এই সিস্টেম চলে আসতেসে। কেউ গত ৯৮ বছরে এর আমলাতান্ত্রিক জঘন্যতম ব্যবস্থাগুলো চেঞ্জ করার চেষ্টাও করেনি। অথচ গত একশো বছরে পৃথিবী এগিয়েছে কয়েকশো গুণ জোরে। আর মানুষের সময়ের মূল্যের কথা তো এসব কাজে বসে থাকা মানুষগুলোর মাথার উপর দিয়ে যাবে! ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :