মোহাম্মদ মাসুদ : ফি বছর সপরিবারেই গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল হন। এবারই প্রথম ভোটের লাইনে অসম্পূর্ণ পাম অ্যাভিনিউয়ের ভট্টাচার্য পরিবার। বাড়ির কর্তা অসুস্থ’, তাই ভোট দিতে গেলেন না। গৃহকর্ত্রী এবং মেয়ে শেষবেলায় গেলেন নির্ধারিত ভোটকেন্দ্র পাঠভবন স্কুলে। সংবাদ প্রতিদিন
বলা হচ্ছে, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর কথা। চলতি লোকসভা ভোটের শেষ দফায় ভোট কলকাতা দক্ষিণে। এই কেন্দ্রেরই ভোটার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তাঁর পরিবার। এবছর বুমুখী হলেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী৷ বিকেলে, ভোট শেষ হওয়ার ঠিক আগে কেন্দ্রে গেলেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য, মেয়ে সুচেতনা। জানা হল, বুদ্ধদেববাবু অসুস্থ ভোট দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।
পরিবার সূত্রে যতই বুদ্ধবাবুর অসুস্থতাকে দায়ী করা হোক না কেন, রাজনৈতিক মহলের একাংশ একে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করছেন। ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়ে, ফলপ্রকাশের দিনই মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তখনই বোঝা গিয়েছিল, রাজনৈতিক সন্ন্যাসের পথে হাঁটতে চলেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দুঁদে রাজনীতিকদের সেই ধারণা পুরোপুরি না মিললেও, সত্যিই প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে সরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী৷ একে একে পলিটব্যুরো, কেন্দ্রীয় কমিটি-সহ সংগঠনের একাধিক দায়িত্ব ছেড়ে দেন। নেহাৎই বয়সের কারণ দেখিয়ে কিন্তু তারপরও ২০১৬-এ দল তাঁকে প্রচার ময়দানে নামিয়েছিল। রাজ্যে ফের বামফ্রন্টকে ক্ষমতায় ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ সভা, মিছিলে ভিড় একেবারে পাতলা ছিল না।
তারপরেও আদর্শ কমিউনিস্ট হিসেবেই সর্বদা ছিলেন দলের পাশে। সময়ের সঙ্গে শরীর ভেঙে পড়ায় ঘরবন্দি থাকতেই পছন্দ করতেন এবং দিনভর পড়াশোনা নিয়ে থাকতেন। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে বামেদের মেগা ব্রিগেডে দেখা গিয়েছে দলের অন্যতম শীর্ষনেতাকে। তবে মঞ্চে নয়, ময়দানে গিয়েও বসে ছিলেন গাড়ির ভিতরে। আর অভিজ্ঞ চোখে পর্যবেক্ষণ করছিলেন সমর্থকদের স্বতস্ফূর্ততা।
ভোটব্যাংকের জরাজীর্ণ দশা বেশ টের পেয়েছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। আর তৃণমূল বিরোধিতায় রাজ্যস্তরে বিজেপির সঙ্গে তলে তলে হাত মেলানোর খবরও কানে পৌঁছেছিল নির্ঘাত। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে বলেছেন, উনি বিজেপি বিরোধী৷ সবমিলিয়ে, আসন্ন নির্বাচনী ফলাফলের আঁচ এখনই টের পেয়ে গিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ তাই সেই প্রক্রিয়াতেই অংশ নিলেন না!