শিরোনাম
◈ চাকরিজীবীদের বিক্ষোভ-আন্দোলনে চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার? ◈ সচিব পদে বড় রদবদল ◈ মোহাম্মদপুরের ত্রাস এক্সেল বাবু গ্রেপ্তার ◈ সৌদি আরবে ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা ◈ সরকার ও রাজনৈতিকদলগুলো দুই মেরুতে, কোন দিকে যাচ্ছে ক্ষমতার রাজনীতি ◈ প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,  ১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার ঘোষণা আসবে  প্রত্যাশা করছি ◈ সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের রুপরেখার সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসায় হতাশ হয়েছে বিএনপি ◈ ‘এবারের হজযাত্রার এক অলৌকিক ঘটনা’ ◈ বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক, আনচেলত্তি ব্রা‌জি‌লের কোচ হিসা‌বে বছ‌রে বেতন পা‌বেন ১০৮ কো‌টি টাকা! ◈ একদিনে ডেঙ্গুতে ভর্তি ৭০, করোনা শনাক্ত ৬

প্রকাশিত : ০৫ মে, ২০১৯, ০১:২০ রাত
আপডেট : ০৫ মে, ২০১৯, ০১:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রোজা সম্পর্কিত ৪ আয়াত ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা

আল-আমিন : ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে রোজা অন্যতম। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তায়ালা রোজার প্রতিদান নিজ হাতে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আমাদের এই আয়োজনে রোজা সম্পর্কিত কোরআনের ৪টি আয়াত এবং এ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা তুলে ধরা হলো :

১. ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্যে সিয়ামের বিধান দেয়া হলো, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সূরা বাকারা- ১৮৩)

প্রাসঙ্গিক কিছু কথা : অর্থাৎ রোজা রাখার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করতে পারো। এখানে পূর্ববর্তীদের কথা বলা হয়েছে যাতে উম্মতে মুহাম্মাদি ঘাবড়ে না যায়। যে কাজ শুধুমাত্র একজনের ওপর আরোপ করা হয় সে কাজ অনেক সময় কঠিন বলে মনে হতে পারে। আর যদি কয়েকজনকে একসঙ্গে কোন কাজ দেয়া হয় তখন সেটা অনেকখানি সহজ বলে মনে হয়। এ জন্য আল্লাহ পাক আমাদেরকে বলছেন যে, এই রোজার বিধান শুধুমাত্র তোমাদেরকে দেয়া হচ্ছে বিষয়টা এমন নয়। তোমাদের পূর্বপুরুষ যারা ছিলো তাদের ওপরও রোজার বিধান ফরজ করা ছিলো। অবশ্য টানা একমাস রোজা রাখা এই উম্মতের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এর আগে যাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছিলো তাদের ওপর হয়তো বছরে ১টি/৩টি/৫টি এরকমভাবে ফরজ করা হয়েছিলো।

২. ‘সিয়াম নির্দিষ্ট কয়েক দিনের। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে অথবা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূর্ণ করবে। এটা যাদের অতিশয় কষ্ট দেয় তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদইয়া-একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্যে অধিকতর কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে।’ (সূরা বাকারা- ১৮৪)

প্রাসঙ্গিক কিছু কথা : রোজা রাখার বিধান চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রেখো এবং চাঁদ দেখে রোজার মাসের সমাপ্তি করো। আর যদি মেঘের আড়ালের কারণে চাঁদ দেখা না যায়, শাবান মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করো। (সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম) সহীহ মুসলিমের একটি রেওয়ায়াতে বলা হয়েছে, যদি তোমাদের উপর মেঘ ছেয়ে যায় তাহলে ত্রিশ দিন রোজা রাখো।(রিয়াদুস সালেহীন ৩/১৫৯ হাদীস নং ১২২১) আরো একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের আগে রোজা রেখো না, বরং চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে শেষ করো। যদি তোমাদের ও চাঁদের মাঝখানে মেঘ প্রতিবন্ধক হয়ে যায় তাহলে ত্রিশ দিন পূর্ণ করো।’ (তিরমিযী, রিয়াদুস সালেহীন ৩/১৬১ হাদীস নং ১২২৫) উক্ত আয়াতে কারিমায় আল্লাহ পাক বলেছেন, কোন মুসলমান যদি রমজান মাসে অত্যধিক অসুস্থ থাকে অথবা সফরাবস্থায় থাকে তাহলে সে রমজানের বাইরে অন্য সময় এই রোজাগুলি আদায় করে নিবে। তবে যাদের জন্য এটি সম্ভবপর হবে না তারা কোন মিসকিনকে দুইবেলা করে ৬০দিন খাবার খাওয়াবে। অথবা একজন মিসকিনকে দুইবেলা করে ৩০দিন খাবার খাওয়াবে।

৩. ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে।সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে এবং কেউ অসুস্থ থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্যে কষ্টকর তা চান না, এ জন্যে যে তোমাদের সংখ্যা পূর্ণ করবে এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করবে এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারে।’ (সূরা বাকারা- ১৮৫)

প্রাসঙ্গিক কিছু কথা : মানবজীবনের গাইডলাইন কোরআনুল কারিম রমজান মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে। মূলত এই কারণেই রমজান মাসের গুরুত্ব এবং ফজিলত এতো বেশি। পবিত্র কোরআনকে বলা হয়েছে সত্য এবং মিথ্যার পার্থক্য নির্ণয়কারী। উদাহরণস্বরূপ, কোন কোম্পানি যখন কোন গাড়ি বা মোবাইল তৈরি করে তখন তার সঙ্গে তারা একটি গাইডলাইন দেয়। যাতে যন্ত্রটি যথাযথভাবে ব্যবহার করা যায়।

৪. ‘সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্যে তোমাদের স্ত্রীদের বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্যে এবং তোমরাও তাদের জন্যে পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা তোমাদের নিজেদের সাথে খিয়ানত করছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদেরকে মার্জনা করেছেন, সুতরাং এখন তোমরা তাদের সাথে সংগত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা নির্ধারণ করে রেখেছেন (অর্থাৎ সন্তান) তা অন্বেষণ করো। আর তোমরা আহার করো ও পান করো যতক্ষণ তোমাদের জন্যে (রাত্রির) কালো রেখা থেকে ফজরের সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় তাদের সাথে সংগত হয়ো না। এগুলো আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমা, সুতরাং এর নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্যে তার আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করতে পারে।’ (সূরা বাকারা- ১৮৭)

প্রাসঙ্গিক কিছু কথা : রোজা হচ্ছে- সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার ও কামাচার থেকে বিরত থাকার নাম। নির্দিষ্ট এই সময়ের বাইরে এই কাজগুলি করা অন্যায় নয়। অনেকের ধারণা ছিলো, রমজান মাসে বোধয় রাতের বেলায়ও স্ত্রীর কাছে যাওয়া যাবে না। কিন্তু এই আয়াতে কারিমায় আল্লাহ তায়ালা বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, রাতের বেলায় স্ত্রী সম্ভোগ করা হালাল। পাশাপাশি এও বলে দিয়েছেন, স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরের পরিপূরক। উভয়ের কাছেই উভয়ের নির্দিষ্ট কিছু হক রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়