আহমেদ শাহেদ : ক্রিকেটপ্রেমী জায়ানের প্রিয় খেলোয়াড় ছিলো বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সাকিবের সাথে দেখা করার ইচ্ছাটাও ছিলো উন্মাদনা পর্যায়। অবশেষে মামা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম ভাগ্নের ইচ্ছে পূরনের জন্য ফোন করলেন সাকিব আল হাসানকে।
তিনি সাকিবকে জানান, আমাদের বাসায় আপনার একজন ক্ষুদে ভক্ত আছে। আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়। সেই কথা শুনে ক্ষুদে ভক্তের সঙ্গে দেখা করতে বনানীর ২ নম্বর সড়কের ৯ নম্বরের বাসায় ছুটে যান সাকিব। সেখানেই দেখা হয় ক্ষুদে ভক্ত জায়ানের সঙ্গে। সাকিবকে কাছে পেয়ে সে কি আনন্দ জায়ানের, কাছে পেয়েই সে ক্ষান্ত হয় নি। সাকিবকে সাথে নিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় ক্রিকেটও খেলেছিলো জায়ান। এসব দৃশ্য এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে আছে জায়ানের নানা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের পরিবারের।
শেখ সেলিমের বাসার কর্মী সুমন জানান, একদিন নয় কয়েক দিনই সাকিব বাসায় এসেছেন। জায়ানের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন, খেলা করেছেন। জায়ান সাকিবকে খুব পছন্দ করত। বাংলাদেশ দলের জার্সি গায়ে দিয়ে সে প্রতিদিন ক্রিকেট খেলত। ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি ফুটবল খেলাও তার প্রিয় ছিল। টিম আর্জেন্টিনাকে খুব পছন্দ করত। বিশেষ করে মেসিকে। বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য শাহীন বলেন, ক্রিকেটার সাকিব প্রায় এক ঘন্টা করে কয়েক দিনই জায়ানকে সময় দিয়েছেন।
সাকিবের সঙ্গে সময় কাটিয়ে এসে জায়ান আমার কাছে বলত পুলিশ আঙ্কেল, আজকে না সাকিব আঙ্কেল এসেছিলেন। অনেক মজা হয়েছে। তিনি বলেন, খেলার সময় আসলেই জায়ান এসে বলত দেখেনতো পুলিশ আঙ্কেল এখানে গাড়ি চালক কে আছেন। একটু গাড়িটা সরাতে বলেন। আমি খেলব।
স্মৃতিচারণ করে শাহীন বলেন, জায়ান প্রথম যেদিন কোরআন শরীফ হাতে নিয়েছিল ওই দিন তার মায়ের কাছে আবদার করেছিল বাসার সকল স্টাফ ও পরিবারের সদস্যদের আইসক্রিম খাওয়াতে হবে। পরে তার মা সবাইকে আইসক্রিম কিনে দিয়েছেন। প্রতিদিন বিকাল বেলা সে কোরআন শিখতে বাসার বাইরে যেত। গত রমজান মাসে সে আমাদের সঙ্গে বাড়িতেই তারাবির নামাজ পড়েছে। রমজান মাস আসছে জায়ানকে খুব মিস করব।
নিরাপত্তাকর্মী জাহিদ বলেন, ক্রিকেট খেলা সে খুব পছন্দ করত। সুযোগ পেলেই ক্রিকেট খেলত। সর্বশেষ বিপিএলের আসরে সাকিবের খেলা দেখতে সে মিরপুর স্টেডিয়ামে গিয়েছিল।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় মারা যায় শিশু জায়ান। বাবা-মা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে সেখানে বেড়াতে গিয়েছিল সে। বিস্ফোরণে তার বাবা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স গুরুতর আহত হন। তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার দুটি পা বোমায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।