শিরোনাম

প্রকাশিত : ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ০২:১৮ রাত
আপডেট : ১১ এপ্রিল, ২০১৯, ০২:১৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দ্য আর্ট নিউজকে শহিদুল আলম বললেন, আমি সরকারের বিরুদ্ধে নই, অবিচারের বিরুদ্ধে

লিহান লিমা: নভেম্বরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। সম্প্রতি নিউইয়র্কের ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ফটোগ্রাফি’ তাকে সম্মাননা প্রদান করে। সেখানেই দ্য আর্ট নিউজের সঙ্গে সাক্ষাতকার দেন তিনি।

চলমান মামলা নিয়ে শহিদুল আলম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তারা (সরকার) কোন অভিযোগ গঠন করতে পারে নি। আমার আটক একটি ভয়ের পরিবেশের বার্তা দিয়েছে। বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতিকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। যদি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এটি করা হয় তবে বুঝতে হবে, ভয়ের পরিবেশ কতটা বিরাজ করছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশ এখন একটি পুলিশি রাষ্ট্র। আমার গ্রেপ্তার মানুষকে এই বার্তা দিয়েছিলো যে, চুপ থাকতে হবে।’

শহিদুল আলম বলেন, ‘জেলে আমি এমন অনেককে দেখেছি যারা আমর ফেসবুকে লাইক দিয়েছে ও পোস্ট শেয়ার করেছে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমন একটি পরিস্থিতি যে, এটিও অপরাধ। বাংলাদেশে ক্রসফায়ার, গুম ও ভয়ের সংস্কৃতি বিরাজ করছে। যদিও বাংলাদেশে শিক্ষার্থী ও শিল্পীরা ঐতিহ্যগতভাবেই অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে এখন চুপ থাকার সংস্কৃতি চলছে। অনেকেই আছেন তাদের কাছ থেকে প্রতিবাদের প্রত্যাশা করা যায়, কিন্তু তারা চুপ রয়েছেন। গণমাধ্যমও সমঝোতা করে চলছে। সরকার জাতীয় নির্বাচন কবজা করার পর এখন স্থানীয় নির্বাচনগুলোতেও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।

শহিদুল স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমার অবস্থান সরকারের বিরুদ্ধে নয়। আমার প্রতিবাদ অবিচারের বিরুদ্ধে। এবার সে যে সরকারই করুক না কেন। এরশাদের সময় আমার মাথায় গুলি লেগেছে। বিএনপি আমলে আমাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আর এখন এ সরকার আমাকে জেলে দিয়েছে। তাদের সবার আচরণই এক।’

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সক্রিয়তার প্রয়োজন সম্পর্কে শহিদুল বলেন, ‘এটি আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমার মতো মানুষের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ তখন তারা নিজেদের একা মনে করবে না। যদিও সরকারের কাছে এটি ভিন্ন হতে পারে। কারণ এই সরকার কথা শোনার না। আমি এর আগে বলেছি, ইউরোপিয় ইউনিয়ন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছে। এর অর্থ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় যেন রাজনৈতিক গোষ্ঠিগুলোকে বলতে পারে, ‘যথেষ্ঠ হয়েছে, আমরা আর নিতে পারছি না।’

শহিদুল আলম একজন আলোকচিত্রশিল্পী, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী। তিনি ১৯৮৯ সালে দৃক ফটো গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দক্ষিণ এশিয়ার ফটোগ্রাফি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘পাঠশালা’। ২০০০ সালে ‘ছবিমেলা’ নামে আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র চিত্রপ্রদর্শনীর সূচনা করেন। তিনি নেদারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ডপ্রেস ফটো প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম এশীয় হিসাবে তিনি এ সম্মান অর্জন করেন।। তিনি ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগজিনের টাইম বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব ২০১৮ হিসেবে নির্বাচিত হন। সম্পাদনা : ইকবাল খান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়