শিরোনাম
◈ পিএসজিতে দুই মওসুম কাটা‌লেও মোটেও উপভোগ করেননি মেসি ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া? বিএনপি–জামায়াতের মধ্যে আলোচনা উদ্যোগ ◈ আজ ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস ◈ ভয়ানক অভিযোগ জাহানারার, তোলপাড় ক্রিকেটাঙ্গন (ভিডিও) ◈ জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও সময়মতো জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিতের আহ্বান বিএনপির স্থায়ী কমিটির ◈ কমিশনের মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা, আপ্যায়ন বাবদ ব্যয়  ৪৫ লাখ টাকা ◈ ভার‌তের কা‌ছে পাত্তাই পে‌লো না অস্ট্রেলিয়া, ম‌্যাচ হার‌লো ৪২ রা‌নে ◈ শুল্ক চুক্তির অধীনে মা‌র্কিন উ‌ড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি বিমান কিনছে বাংলাদেশ ◈ টিটিপাড়ায় ৬ লেনের আন্ডারপাস, গাড়ি চলাচল শুরু শিগগিরই (ভিডিও) ◈ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ বার্তা

প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৩৩ রাত
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৩৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে কচুরিপানা আকড়ে ধরতে হবে

মতিনুজ্জামান মিটু: প্রবাদে আছে বিপদে মানুষ খড়কুটো ধরেও বাঁচার চেষ্টা করে। খড় কুটোর মতো হলেও জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষির ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বিশেষ অবদান রাখতে পারে কচুরিপানা বললেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মহীউদ্দীন চৌধুরী।

কচুরিপানা এখন কৃষির এক মহাসম্পদ হতে পারে উল্লেখ করে এই কৃষি বিজ্ঞানি জানান, বিশ্বের প্রায় সব উন্নত দেশ তাদের প্রকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের জন্য গড়ে তুলেছে ন্যচারাল রিসোর্স ইউটিলাইজেশন গ্রুপ এবং ন্যাচারাল রিসোর্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট নামের অনেক প্রতিষ্ঠান। অথচ স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও কৃষি প্রধান বাংলাদেশে এধরণের কোনা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এবিষয়ের নেই কোনো স্বাতন্ত্র বিভাগ এবং গবেষণাসহ অন্যান্য কার্যক্রম। তাই অধরাই থেকে গেছে এদেশের কচুরিপানা ও কলাগাছসহ অনেক প্রাকৃতিক সম্পদের গুরুত্ব। কচুরিপানা এমন একটি প্রাকৃতিক সম্পদ যা ব্যবহারের মাধ্যমেই এর গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়।

জলবায়ু পরিবর্তন এখন বাংলাদেশের একটি নির্মম বাস্তবতা। জলবায়ু পরিবর্তনের কু প্রভাবে দ্রুত বাড়ছে ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড়ের সংখ্যা এবং ভারি ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। গলছে হিমালয়ের বরফ, বাড়ছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা। বাড়ছে উপকুলীয় অঞ্চলে লবনাক্ততার পরিমাণ। দেখা গেছে তীব্র খরা। এসব কারণে সবচেয়ে মারাত্মক আঘাত আসছে বাংলাদেশের কৃষি খাতের ওপর।

এবার আমন মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ২ থেকে ৩ বার ধানের চারা রোপন করেও কুলকিনারা পায়নি কৃষক। ইন্টারগভর্নমেন্ট প্যানেল অব ক্লাইমেট চেঞ্জ’র (আইপিসিসি) হিসেব মোতাবেক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ধান উৎপাদন শতকরা ৩২ ভাগ ও গম উৎপাদন আট ভাগ কমে যাবে।

জলবায়ু পরিবর্তনে বিরুপ প্রভাবে বৈশ্বিক গড় উচ্চতার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গোপসাগর পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে অনেক বেশি পরিমাণ। এর প্রভাবে বাড়ছে লবনাক্ততা, কমছে কৃষি জমি। বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজের গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, গত ৩৬ বছরে বাংলাদেশের উপকুলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ।

১৯৭৩ সালে যেখানে লবণাক্ত জমির পরিমাণ ছিলো ৭ লাখ ৫০ হাজার ৩৫০ হেক্টর, ২০০৯ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৮০ হেক্টর। আশংকা করা হচ্ছে আগামী ২০৫০ সালে বাংলাদেশের তাপমাত্রা ১.৫ থেকে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বাড়বে। এতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেড়ে যাবে। এই অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত কৃষি উৎপাদনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

পরিবর্তিত জলবায়ুতে কচুরিপানা এমন একটি প্রাকৃতিক সম্পদ যা সুকৌশলে ব্যবহারের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশ হবে সমৃদ্ধশীল। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে মাটির ক্ষয়রোধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম উপসর্গ তাপমাত্র বৃদ্ধি কমাতে কচুরিপানাকে কাজে লাগানো যায়। ভার্মি কম্পোজ বা কেঁচো সার তৈরী এবং অবিরাম বর্ষণে গো খাদ্যের যোগানদাতা হয়ে উঠতে পারে এই কচুরিপানা।

কেঁচো বৃদ্ধিতে সহায়ক ১৮০ মেট্রিক টন কচুরিপানা থেকে প্রায় ৬০ টন জৈব সার উৎপাদিত হতে পারে। দেশে বিপুল পরিমাণ কচুরিপানা উৎপাদন হয়ে থাকে। কচুরিপানার প্রাচুর্যে অনেক সময় নদ নদীতে জাহাজসহ নৌযান চলাচল আটকে যায়। হেক্টর প্রতি এদের বৃদ্ধি ১৭ টনেরও উপরে এবং এক সপ্তাহের মধ্যেই দ্বিগুণ হয়ে যায়। কচুরিপানায় খুব দ্রুত ফুল ফোটে। তাই কচুরিপানা এখন কৃষির এক মহাসম্পদ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়