রাশিদ রিয়াজ : পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক মার ও কূটনৈতিকভাবে এক ঘরে করতে চূড়ান্ত কৌশল নিয়ে আগাচ্ছে ভারত। পুলওয়ামারে ৪৯ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানকে মোস্ট ফেভারড নেশন তকমা খারিজের পর দেশটি থেকে আমদানিকৃত ১৩৭টি পণ্যের উপর আরোপিত সাড়ে ৭ থেকে ৩০-৫০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ শতাংশে। গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পাকিস্তান ৩৮১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে ভারত। ফলে নড়বড়ে পাকিস্তানি অর্থনীতির ওপর ভারতের শুল্ক বৃদ্ধি বড় ধাক্কা কারণ ভারতের চেয়ে দেশটিতে ৩ গুণেরও বেশি মূল্যের পণ্য রফতানি করে পাকিস্তান। একই সঙ্গে ভারতের বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল খোশালা পোখরানে মহড়া শুরু অনুষ্ঠানে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্যে বিমান বাহিনীকে তৈরি থাকতে বলেছেন।
তবে এধরনের বাণিজ্য যুদ্ধ কিংবা দেশটিকে এক ঘরে করে রাখাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ স্বপ্ন কখনই পূরণ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশী। কোরেশীর দাবি ভারত জার্মানি, কানাডা, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তানসহ যে ২৫টি দেশের সঙ্গে আলোচনায় পাকিস্তানকে এক ঘরের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি ভারতের নেতাদের আরো বৃহৎ পরিসরে চিন্তা ও নির্বাচনের বাইরে ভাববার আহবান জানান। কোরেশী বলেন, পাকিস্তানের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পেলে জানান, সহযোগিতা করব। প্রমাণ ছাড়া ভারত অতীতেও এধরনের দাবি করেছে।
অন্যদিকে পাকিস্তান মুসলিম লীগের নেতা শাহবাজ শরীফ বলেছেন, মোদীকে সবার আগে কাশ্মীরিদের বেদন উপলব্ধি করতে হবে। ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন চলছে। বরং পাকিস্তানে গোলযোগ সৃষ্টি করতে ভারতের দীর্ঘদিনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ভারতের মিডিয়াগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো বলছে, তিন বছর আগে পুলিশের ‘নাকখত’ শাস্তির প্রতিশোধ নিতেই আদিলের জঙ্গিযোগ, এমনটি বলেছেন তার বাবা। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে একদিন বন্ধুদের কথা শুনে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়েছিল আদিল। তার পর ছুটে পালাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। ধরা পড়ে যায় প্ুিলশের হাতে। প্রথমে মারধর। পুলিশের জিপের চারপাশ নাকখত দিতে দিতে ঘোরানো হয়েছিল তাকে। ওই ঘটনায় প্রচ- অপমানিত হয়েছিল আদিল। মাঝেমাঝেই বাবা-মাকে সে বলত, “পুলিশ আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার কেন করল?” বাবা গুলাম হাসান দার এবং মা ফাহমিদার কথায়, এর পর থেকেই আদিল একগুঁয়ে এবং রুক্ষ স্বভাবের হয়ে পড়েছিল। এরপর জঙ্গিদের দলে যোগ দিয়ে পুলাওয়ামে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা ঘটায় সে।
পুলওয়ামায় হামলার কয়েক মাস আগে একটি পাকিস্তানি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রাক্তন জেনারেল স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, “ভারতে খুব শীঘ্রই আত্মঘাতী হামলা হবে। কারণ সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে ভারত বড় বড় কথা বলছে। আমাদের তাকত কতটা, তা ওদের সমঝে দেওয়ার সময় এসেছে।” তবে এ হুমকিকে পাত্তা দেয়নি ভারত।
এদিকে ভারতের পাশাপাশি ইরানে জঙ্গি হামলায় ২৭ সেনা নিহত হওয়ার পর দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মুহম্মদ আলি জাফারি বলেছেন পাকিস্তানে নিশ্চিন্তে রয়েছে জঙ্গিরা। কেন পাকিস্তান এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না ? এজন্যে চড়া মূল্য দিতে হবে দেশটিকে। একই সঙ্গে ইরান বিরোধী কোনো নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করবে না ভারত তা জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।