জাবের হোসেন: পরিবেশবান্ধব পাটের তৈরি পলিমার শিটের সুনাম দেশের সীমা ছাড়িয়ে এখন বিদেশেও। পলিমার শিট বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবার কথা ছিল এ বছরের মাঝামাঝি। এনিয়ে যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে সরকারের চুক্তিও হয়েছিল। কিন্তু এখনো মুখ থুবড়ে পড়ে আছে এই প্রকল্পের কাজ। চুক্তির কোন শর্তই পূরণ করেনি বিদেশি প্রতিষ্ঠানটি। আদৌ তারা কাজ করবে কিনা সেটি নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। উদ্ভাবনের পর থেকে লতিফ বাওয়ানী জুটমিলের গুদামে পরীক্ষামূলকভাবে হচ্ছে পাটের পলিথিন তৈরির কাজ। উদ্ভাবকের তৈরি যন্ত্রপাতিতে ভর করে ছোট পরিসরেই চলছে প্রকল্পটি। চ্যানেল ২৪
শুরুতে প্রকল্পটি নিয়ে সরকার অনেক স্বপ্ন দেখালেও এ নিয়ে হয়নি তেমন কোনো কাজ। উৎপাদন পদ্ধতিকে আরও আধুনিক করতে, প্রয়োজনীয় ৫/৬টি যন্ত্রের মধ্যে এ পর্যন্ত কেনা হয়েছে একটি মাত্র প্যাকেজিং মেশিন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যতো দ্রুত সম্ভব এর বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের অক্টোবরে, প্রযুক্তিগত সহায়তা পেতে যুক্তরাজ্যের ফুটামোরা কোম্পানীর সাথে চুক্তি করে পাটকল করপোরেশন বিজেএমসি। চুক্তি অনুযায়ী তাদের পাটের সলুলোজের নমুনা পাঠানো হলেও, গেল চারমাসে কোম্পানিটির সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি বিজেএমসি।
বিজিএমসি এর পাট পলিব্যাগের উদ্ভাবক এবং প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মোবারক আহমদ খান বলেন, প্রথম দিকে আমার কাছে যেসব জিনিস জানতে চেয়েছে তাতে মনে হয়েছে আমার পুরো প্রসেসটাই তাদের বলে দিতে হবে। কারণ তারাতো আমাকে দিবে টেকনোলজিক্যাল সহযোগিতা এবং মেশিনারিজ সাপ্লাই। তাদের তো আমার টেকনোলজি সম্পর্কে জানার প্রয়োজন নেই। আমার তৈরি সেলুলোয়েজ তাদের পাঠিয়ে দিয়েছি, কিন্তু আমি তাদের কাছে কিছু জিনিস চেয়েছিলাম তারা আমাদের তা পাঠায়নি।পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলছেন, পাটের তৈরি এই সোনালী ব্যাগের বাণিজ্যিক উৎপাদনে ভবিষ্যতে উৎসাহিত করা হবে বেসরকারি খাতকে।
তিনি আরো বলেন, এই প্রজেক্ট নিয়ে আমরা মার্কেটিং যাবো। আমরা দেখবো জনবান্ধব হয়েছে এবং জনগণ ব্যবহার করছে, তখন আমরা বড় মার্কেটিং এ চলে যাবো, এবং সেই সঙ্গে আমরা যদি মনে করি আরো বড় পরিসরে যাওয়া যায়। সেই ক্ষেত্রে আমাদের বৈজ্ঞানিককে বলবো আপনার ফর্মুলেশনটা মার্কেটে দেন যাতে করে বেসরকারি ভাবে সারাবিশে^ তারা ছরিয়ে দিতে পারে। মন্ত্রী আরও জানান, সরকার উৎপাদন শুরু করলেও ব্যবসা করবে না।
উদ্ভাবনের পর থেকেই বেশ আশা জাগিয়েছি পাটের তৈরি এই পলিমার। সরকারের পক্ষ থেকেও দেয়া হয়েছিল অনেক আশ্বাস। কিন্তু এখন পর্যন্ত আর্থিক সংকটের কারণে সব ধরনে যন্ত্রপাতি কেনা হয়নি এই প্রকল্পের। তাই কবে নাগাত এর বাণিজ্যিক উৎপাদন সফল এবং বাস্তবায়ন হবে সেটাই এখন অপেক্ষা।
আপনার মতামত লিখুন :