শিমুল মাহমুদ : দারিদ্র্য এখনও বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা, তাই দারিদ্র্য দূর করার পাশাপাশি মানুষের মৌলিক অধিকার ও মান উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে সরকার। এমনটায় জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুষম বণ্টন নিয়ে রোববার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি বলেন, দারিদ্র্য আমাদের নেকড়ের মতো তাড়া করছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, সমতা ও জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণেই হচ্ছে আমাদের মুল লক্ষ্য।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। আর অতি দারিদ্র্যের হার ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। সংস্থাটির ২০১০ সালের খানা আয় ও ব্যয় জরিপ অনুযায়ী, তখন দেশের সার্বিক দারিদ্র্যের হার ছিল সাড়ে ৩১ শতাংশ।
মানসম্পন্ন শিক্ষার কথা বললেই ইংরেজি শিক্ষার কথা বলা হয় মন্তব্য করে এই ধারণার সমালোচনা করেন তিনি। চীন, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডসহ অনেক দেশেই ইংরেজি শিক্ষা দেওয়া হয় না। তারা ইংরেজিও বলে না। তারা কি উন্নয়ন করছে না?, প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মন্ত্রী। বাংলা ভাষায়ও মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এম এ মান্নান বলেন, অনেক দেখি গ্রামের কথা বলতে গিয়ে অজপাড়াগাঁ বলেন। দয়া করে অজ বলবেন না। অ মানে অসভ্য। আমাদের এখন কোনো অজপাড়াগাঁ নেই। আপনারা গাঁয়ে গিয়ে দেখে আসুন। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। গ্রামের চিকিৎসা সেবার মান বেড়েছে। বাচ্চারা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে যাচ্ছে। এসব তো অস্বীকার করা যাবে না। সরকারের উন্নয়ন এসব। গ্রামের কমিউনিটি হাসপাতালে আমরা ৩৫টি ঔষুধ বিনা মূল্যে দিচ্ছি। সবাইকে উন্নয়নে নজর দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, শিক্ষাখাতে দুই একজন মানুষের দুর্নীতির জন্য গেলো গেলো রব উঠে। এটা ঠিক না। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলেই শিক্ষাখাতে এতো বিনিয়োগ হচ্ছে। এসব উন্নয়নের বিষয়েও আলোচনা করতে হবে। দুর্বলতাগুলোকে যেমন সামনে আনতো হবে ঠিক তেমনি উন্নয়নের বিষয়গুলোও সামনে রাখতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্রদায়িকতার দিকে আমরা কোনো আপোষ করবো না। আমার সুষমের উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবো। উন্নয়নের জন্য সকলকেই এসব বিষয়ে ভাবা উচিত।
গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আইন মানুষকে রক্ষা করে। কিন্তু এখন আইন হয়ে গিয়েছে নির্যাতনের অস্ত্র। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে নির্বাচনী ম্যানুফেস্টে বলেছিলো বিচার বহির্ভূত হক্যাকা- বন্ধ হবে। কিন্তু তা হয়নি। শুধু ডাক্তারদের কর্মস্থানে পাওয়া যায় না এমন কথা উঠছে কেন। বিচারকদের অবস্থা কি? বিচারকরা বৃহস্পতিবার সকালে কর্মস্থান ছাড়েন আর ফেরেন সোমবার বিকেলে। কারণ তাদের স্ত্রী সন্তানরা ঢাকায় থাকেন। একই অবস্থা ডিসি ও ইউএনওদেরও। তাদের হেদায়েত করা শেখাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দেশের ভালোই চাচ্ছেন কিন্তু তা তার আশেপাশের মানুষরা তাকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রোহমান সোবহান,সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা শিক্ষাবীদ রাশেদা কে চৌধুরী, বিএমএ এর সাবেক সভাপতি রশিদিন মাহবুব, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সিপিডির সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
আপনার মতামত লিখুন :