সুজন কৈরী : বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে চাকরি দেয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাৎকারী ভুয়া প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করেছে র্যাব-৪।
বুধবার বিকেল থেকে দিবাগত রাত পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুরের অরিজিনাল ১০ নম্বর এলাকায় বেনারশী পল্লীর দুই নম্বর গেইট সংলগ্ন একটি অফিসে এ অভিযান চালানো হয়। আটককৃতরা হলেন- চক্রের মুল হোতা আতাউর রহমান সুমন (৩৮), রোকন হোসেন (২৭), মনোয়ারা বেগম (৪১), মো. রুবেল (১৯) ও মো. শাহেদ (২৬)।
র্যাব জানায়, তারা গত দুই বছর ধরে একাধিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির নামের আড়ালে প্রতারক চক্রের ৮-৯ জন সদস্যের একটি দল রাজধানীর মিরপুর বেনারশী পল্লীতে অফিস স্থাপন করে হাজার হাজার বেকার তরুণ-তরুণী ও ছাত্র ছাত্রীদের ফুল টাইম এবং পার্ট টাইম চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে বিশাল অংকের টাকা আত্মসাত করে আসছে।
র্যাব-৪ এর সিপিসি-১ এর কমান্ডার মেজর কাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, প্রতারণার শিকার কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানটি চালানো হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে কয়েক হাজার সিভি, ভুয়া রেজিস্ট্রার, মানি রিসিপ্ট, চাকরি প্রার্থীদের কাছে পাঠানো চক্রের ভুয়া এসএমএসের কন্টেন্টসহ মোবাইল ফোনসেট, প্রচুর চেকবই, ইন্স্যুরেন্সের ভুয়া ফাইল ফর্ম জব্দ করা হয়েছে। মেজর কাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, বিভিন্ন স্থানে সাঁটানো বিজ্ঞাপন দেখে চাকরিপ্রার্থীরা চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযেগ করলে টাকা দিয়ে ইন্স্যুরেন্স খোলার কথা জানানো হয়। ওই কথায় অনেক চাকরিপ্রার্থী ইন্স্যুরেন্স খুলে এবং তাদের ২ দিনের ভুয়া প্রশিক্ষণ দেয় চক্রটি। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে টাকা ফেরত বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার চাইলে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ভয় ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয় চক্রের সদস্যরা। এভাবে ১০-১৫ দিন করে নতুন নতুন লোক দিয়ে চলতে থাকে তাদের প্রতারণার ব্যবসা। র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, অভিযানকালে নুর ই নুর ইসলাম ওরফে মনির, মোখলেস ও হাবিব নামেরচক্রের অপর তিন সদস্যকে না পাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় প্রতারিত এক তরুণ বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, চক্রটি ট্রাস্ট ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বায়রা লাইফ ইন্সুরেন্স, বেস্ট ইন্সুরেন্স, এন আর বি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির নাম ব্যবহার করে ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে ৫২০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি নিয়ে ১০হাজার টাকা দিলে কনফার্মেশন লেটার ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার নাম করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করে আসছে। বিডি জবস-এর সাইট থেকে চাকরি প্রত্যাশীদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে বিভিন্ন নম্বর ব্যবহার করে ইন্টারভিউয়ের জন্য এসএমএসের মাধ্যমে জানায়।