শিরোনাম
◈ মুগদায় ডিএসসিসির ময়লার গাড়ির ধাক্কায় কিশোর নিহত ◈ বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া মে মাসে, নজর রাখবে ভারত ◈ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু: চুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, যান চলাচল শুরু ◈ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ভারত, চীন বা রাশিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত নয়: মার্কিন কর্মকর্তা ◈ সিলেটে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ২ ◈ থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ ◈ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় ◈ শিক্ষক নিয়োগ: ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি, ঢাবি শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৫ ◈ বিদ্যুৎ-গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না ◈ নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৮:০৫ সকাল
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৮:০৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দশ বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৪ গুণ

রমজান আলী: সরকারের টানা দুই মেয়াদের শাসনামলে গত ১০ বছরে আগের ১০ বছরের তুলনায় খেণাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে চার গুণ। মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ২০০৯ সালে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। আর গত সেপ্টেম্বর শেষে তা বেড়ে হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ বছরে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সাড়ে ৪ গুণ।

এর বাইরে দীর্ঘদিন আদায় করতে না পারা যেসব ঋণ ব্যাংকগুলো অবলোপন করেছে, তার পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের সঙ্গে অবলোপন করা এ মন্দ ঋণ যুক্ত করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা।

এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক তথ্য। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারাই বলছেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরও অনেক বেশি। অনেকগুলো ব্যাংক বড় অঙ্কের ঋণ আদায় করতে পারছে না, আবার তা খেলাপি হিসেবেও চিহ্নিত করছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকও এতে নজর দিচ্ছে না। এ ছাড়া শেয়ারবাজারের অজুহাতে প্রতিবছরই ব্যাংকগুলো নানা ছাড় নিচ্ছে। এতে করে খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্যও বেরিয়ে আসছে না। পাওয়া যাচ্ছে না ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্যের প্রকৃত চিত্র।

এব্যাপারে সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের শক্ত অবস্থান না নেওয়ার কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণ আদায় করার জন্য চাপ সৃষ্টি করতো তাহলেই অনেকটাই খেলাপি কমে যেত। এছাড়া যে ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ আদায় ব্যর্থ হবে, সেই ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দিতো বাংলাদেশ ব্যাংক। তাহলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমে যেত। কারণ ব্যাংকগুলো জানে কার কাছে খেলাপি ঋণ কত আছে। তাহলে ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ ঠিকই আদায় করতো। বাংলাদেশ ব্যাংক কোন শাস্তির ব্যবস্থা করছে না ফলে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ নিয়ে তেমন কোন মাথা ব্যথা নেই। এছাড়া ব্যাংকগুলো ঘুরে ফিরে খেলাপি ঋণ ব্যক্তিকেই ঋণ দিচ্ছে। ফলে খেলাপি ঋণ আরো বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত কঠোরভাবে খেলাপি ঋণ আদায় করার জন্য উদ্যোগি হতে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের ঋণ বেড়ে হয়েছে ৮ লাখ ৬৮ হাজার ৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৯৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, গত জুনে যা ছিল ৮৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৩০ কোটি টাকা। আর ২০১৭ সাল শেষ থেকে ধরলে ৯ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৫ হাজার ৬৭ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৮০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত জুন শেষে ছিল ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। এর মধ্যে ক্রিসেন্ট ও অ্যাননটেক্স গ্রুপের কারণেই জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে সেপ্টেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ৪৩ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশই খেলাপি। গত জুন শেষে যা ছিল ৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বর শেষে বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের (কৃষি ও রাজশাহী কৃষি) খেলাপি ঋণের হার বেড়ে হয়েছে ২১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আর বিদেশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৭ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ একটু বাড়ে। এবারও বেড়েছে। ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণ আদায়ে নিয়মিত তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। ডিসেম্বর শেষে তা কমে আসবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়