আরটিএনএন : চলতি সপ্তাহে আবু দাবিতে ‘Al Burda ‘ নামে ইসলামিক সাংস্কৃতিক উৎসবের শুরু হয়েছে যার মাধ্যমে ইসলামিক শিল্পের অতীত এবং বর্তমানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ উৎসবের মাধ্যমে বৈচিত্র্যপূর্ণ ইসলামি শিল্পকলার প্রদর্শনীর ব্যবস্থা কারা হয়েছে এবং একই সাথে সেখানে শিল্পীগণ সরাসরি অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন যার মধ্যমে ইসলামি সংস্কৃতির গভীর মূল্যবোধের সাথে সকলকে পরিচিত করিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নতুন নতুন ভূমি এবং নতুন জনগোষ্ঠীর নিকটে ইসলাম যত বেশী পৌঁছিয়েছে ইসলামিক শিল্পে তত বেশী নতুন ধারণা যুক্ত হয়েছে এবং নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে এই শিল্প পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত রেখেছে।
ইসলামি এসব শিল্পকলা বর্তমানের এই পর্যায়ে আসতে কয়েক শতাব্দী সময় লেগেছে যা আমরা প্রায়শই এড়িয়ে যাই। ইসলামের শিক্ষা যেখানে যেখানে গিয়েছে ঠিক সেখানকার সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে স্থানীয় প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের মাধ্যমে ইসলামি শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। এর ফলে স্বরূপ ইসলামিক শিল্প সমসাময়িক বিভিন্ন দিকের সাথে মিল রেখে তার প্রভাব অব্যাহত রেখেছে।
উদাহরণ স্বরূপ দুবাই ভিত্তিক শিল্পী আল সেদের কথা ধরা যাক। যিনি প্রকাশযোগ্য ক্যালিগ্রাফির জন্য বিখ্যাত হয়েছেন। করিম জাবেরি নামের শিল্পী যিনি আলোক চিত্র এবং আলোর ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যালিগ্রাফি করে থাকেন। এ সমস্ত উদাহরণ হয়ত ঐতিহ্যবাহী শিল্পের বিপরীত মনে হতে পারে। আসল সত্য হচ্ছে ইসলামিক শিল্প শুধুমাত্র ধর্মীয় শিল্প বা ঐতিহ্যবাহী ইসলামি শহরগুলোর নির্মাণ শৈলীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
‘Al Burda’ ইসলামি সংস্কৃতির উৎসবের মাধ্যমে ইসলামি শিল্পকলায় দক্ষ শিল্পীদের একই ফ্লাট-ফর্মে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। একই সাথে এ উদ্যোগ ইসলামি শিল্পে উদ্বুদ্ধ হয়ে যেসব শিল্পী তাদের সৃজনশীল শক্তির ব্যবহার করতে চান তাদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ নিয়ে এসেছে।
এধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে ইসলামি সংস্কৃতির একেবারে কেন্দ্রিক দিকসমূহ উঠে আসে এবং একই সাথে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করার জন্য আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করে। এই উদ্যোগ ইসলামি সংস্কৃতিকে সংরক্ষণের পাশাপাশি ভবিষ্যতে একে আরো শক্তিশালী করার জন্য উৎসাহ যোগাবে।
ইসলামি শিল্পে তরুণ প্রজন্মের যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তা এক নতুন মাত্রা পাচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম তাদের সৃজনশীল প্রতিভার মাধ্যমে ইসলামি ঐতিহ্যসমূহ তুলে ধরার মাধ্যমে এর সাথে নতুন প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটাচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের নতুন এই উদ্যোগের মাধ্যমে ইসলামি সংস্কৃতি বিকাশের জন্য আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করতে চায় যা ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন উদ্যোগ সৃষ্টির ক্ষেত্র তৈরি করবে।
সংস্কৃতি এবং জ্ঞান চর্চা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইসলামিক শিল্প এবং সংস্কৃতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায়। একটি বৈশ্বিক ফ্লাট-ফর্ম তৈরির করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ইসলামি সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করা ‘Al Burda’ উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য।
‘Al Burda’ উৎসবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪৭ জন বিশেষজ্ঞ বক্তা বিভিন্ন বিষয়ের উপর ইসলামি ইতিহাস এবং ঐতিহ্য তুলে ধরেন। অনেক ধরনের উদ্দেশ্যের মধ্যে এ উৎসবের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে তরুণ প্রজন্মকে ইসলামি ঐতিহ্য শিক্ষা দেয়া যাতে করে তারা তাদের এসব ঐতিহ্যসমূহ উদযাপন করতে পারে কারণ ইসলামিক সংস্কৃতির সংরক্ষণ করার অর্থ হচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য নতুন প্রেরণা রেখে যাওয়া।
সূত্রঃ দ্যা ন্যাশনাল ডট এই।