নূর মাজিদ : মানুষের আবিষ্কৃত খাদ্য কৃত্তিম খাদ্য উপাদানগুলোর মধ্যে সবচাইতে প্রাণঘাতী হলো হাই ক্যালোরি ফ্রুক্টোজ। যা হয়তো ইতোমধ্যেই আপনার শরীরে ডায়াবেটিজের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। এই বিষয়ে মার্কিন গবেষক ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেফ্রি নোরিস বলেন, কৃত্তিম চিনি বা খাদ্যে মিস্টভাব আনতে ব্যবহৃত পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ শতাংশ মানুষের স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। বিশ্বে বাণিজ্যিক প্যাকেটজাত খাদ্য উৎপাদনে বহুল ব্যবহৃত কৃত্তিম উপাদান হলো ‘হাই ক্যালোরি ফ্রুক্টোজ।’ প্রকৃতিতে আখ ও ভুট্টায় প্রাপ্ত শর্করা উপাদানের রাসায়নিক চেইনকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভেঙ্গে গবেষণাগারে তৈরি হয় ফ্রুক্টোজ। বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টা থেকে উৎপাদিত কর্ণ সিরাপে এর উপস্থিতি সবচাইতে বেশি। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং এর দ্বারা উৎপাদিত খাদ্য ও পানীয়ের বিশেষ স্বাদ আনার ক্ষমতার কারণে বিশ্বের বৃহৎ সব খাদ্য ও পানীয় ব্যবসায়ীরা এই উপাদান নির্বিচারে ব্যবহার করেন। এই বিষয়ে মার্কিন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক লুটসুইগ মনে করেন, ‘মাত্রাধিক চিনির ব্যবহার মানুষের মোটা হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি করে, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই ক্ষেত্রে সবচাইতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে খাদ্য ও পানীয়তে হাই ফ্রুক্টোজ কর্ণ সিরাপের ব্যবহার।’
সবচাইতে উদ্বেগের বিষয় হলো কর্ণ সিরাপের মাধ্যমে উৎপাদিত এই সকল খাদ্যদ্রব্য ব্যবহারে আমরা নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছি। এই বিষয়ে ২০১৬ সালে একটি মার্কিন গবেষণাপত্রে বলা হয়, প্রতি বছর বিশ্বে ১ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় গ্রহনের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৮০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত টানা ৩০ বছর বিশ্বের ৫১ টি দেশের ৬ লাখ মানুষের ওপর দীর্ঘ গবেষণা চালিয়ে ম্যাসাচুটসের টফটস বিশ্ববিদ্যালয় এই গবেষণা প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, কোমল পানীয়তে ব্যবহৃত কর্ণ সিরাপ ফ্রুক্টোজ হৃদযন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগ সৃষ্টির পেছনে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, ফাস্ট ফুড উৎপাদনেও উচ্চমাত্রার ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ কর্ণ সিরাপের বহুল ব্যবহার রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-হু ইতোপূর্বে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যা হাই ফ্রুক্টোজ কর্ণ সিরাপের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। কারণ একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চাইতে অধিক চিনি গ্রহণে অভ্যস্ত শারীরিক প্রণালী ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। হু, লাইভ সায়েন্স, ইউসিএসএফ
আপনার মতামত লিখুন :