মো. ইউসুফ আলী বাচ্চু : যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হলে যুক্তফ্রন্ট অবশ্যই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, যেদিন তফসিল ঘোষণা করা হবে সেদিন থেকেই নির্বাচন কমিশন আর প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের অধীনে থাকেবে না। কমিশন রাষ্ট্রপতির কাছে দায়ী থাকবে। এটা প্রধানমন্ত্রীর কথা। তিনি এটা স্বীকার করেছেন।
যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী আজ রবিবার সন্ধ্যায় সম্প্রসারিত যুক্তফ্রন্টের প্রথম বৈঠকে এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্যে জনগণের সাংববিধানিক অধিকার আমরা কায়েম করবোই।
বি. চৌধুরী বলেন, সংলাপে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বেশিরভাগ দাবিদাওয়ার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছেন।
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপের কথা উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচন প্রার্থীদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার আমাদের দাবির সাথে প্রধানমন্ত্রী একমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের অধীনে থাকবে না তফসিল ঘোষণার পর রাষ্ট্রপতির অধীনেই থাকবে। এ সব ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো দ্বিমত নেই।
প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবির সাথে একমত হয়েছেন যে, নির্বাচনের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মচারীরা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই ন্যাস্ত থাকবে। তফসিল ঘোষণার পর এমপিগণ সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি যাতে না দিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রী রাজি হয়েছেন। তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রত্যাহার করা হবে।
নির্বাচনে সেনা বাহিনী দিতেই হবে এ কথা উল্লেখ করে বি. চৌধুরী বলেন, সংলাপের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সেনাবাহিনী উপজেলা পর্যায়ে ষ্ট্রাইকিং ফোর্স্ হিসেবে থাকবে।
বি. চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এ ব্যাপারে অধ্যাদেশ হয়ে গেছে। তবুও তিনি রাষ্ট্রপতির সাথে কথা বলবেন।
বি. চৌধুরী বলেন আজকের বৈঠকটি যুক্তফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক বৈঠক, আমাদের মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এই বৈঠকে কয়েকটি কমিটি গঠন করা হবে। এখানে একটি সেক্রেটারিয়েট কমিটিও থাকবে। যুক্তফ্রন্টের শরিক দলের সমন্বয় কমিটি গঠন এবং একজন মুখপাত্রও নির্বাচন করা হবে।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী এবং আগামী সংসদে ছেলে মাহী বি. চৌধুরীকে দেখতে চান বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী। শুক্রবার গণভবনে যুক্তফ্রন্ট-আওয়ামী লীগ সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি পরোক্ষভাবে এবং পরে যুক্তফ্রন্টের আরেক নেতা সরাসরি এমন অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। একটি নিউজ পোর্টালের এই খবর সম্পর্কে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বি. চৌধুরী বলেন এটা সর্বৈব মিথ্যা।
পরে বি. চৌধুরী সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান সূচনা বক্তব্য দেন।
এ সময় যুক্তফ্রন্টের শরীকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম, গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বিএলডিপি’র চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, মহাসচিব দেলোয়ার হোসেন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেইন ঈসা, জাতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শেখ মো. আসাদুজ্জামান, মহাসচিব এম আশিকুজ্জামান, বাংলাদেশ জন দলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, মহাসচিব সেলিম আহমেদ। বাংলাদেশ মাইনরিটি ইউনাইটেড ফ্রন্টের চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার দাস, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, যুগ্ম মহাসচিব মো. মহসিন ভূইয়া।
এ ছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, এইচ. এম গোলাম রেজা,সহসভাপতিমাহবুব আলী, সাহিদুর রহমান, মিসেস মাহমুদা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি অহিদ উদ্দিন, প্রবাসী বিষয়ক সম্পাদক মুনিরুল ইসলাম্, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান ঝান্টু, যুবধারার সভাপতি আসাদুজ্জান বাচ্চু প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :