ইসলাম ডেস্ক : দরুদ শরিফ ফারসি ও আরবির জোড়া শব্দ। দরুদ শব্দটি ফারসি, শরিফ শব্দটি আরবি। দরুদ অর্থ হলো শুভকামনা, কল্যাণ প্রার্থনা। আর দরুদ শব্দের আরবি হলো ‘সালাত’। সালাত শব্দের মূল চারটি অর্থ—দরুদ বা শুভকামনা, তাসবিহ বা গুণকীর্তন, রহমত বা দয়া-করুণা ও ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা।
পরিভাষায়, দরুদ বলতে ‘আস সলাত আলান নাবি’, অর্থাৎ নবীজির প্রতি দরুদ পাঠ বা তাঁর জন্য শুভকামনা, তাঁর গুণকীর্তন, তাঁর প্রতি আল্লাহর দয়া করুণা প্রার্থনা বোঝায়। সলাত শব্দের আদি অর্থ হলো আগুনে পুড়িয়ে বাঁকা সোজা করা বা আগুনের তাপ দিয়ে বাঁশ ও কাঠকে কাঙ্ক্ষিত নির্দিষ্ট আকৃতিতে আনা।
দরুদ শরিফ ইবাদতের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ এবং ইবাদত কবুলের সহায়ক ও দোয়া কবুলের শর্ত। প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, যে আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করল, আল্লাহ তার প্রতি দশটি রহমত নাজিল করেন, তাকে দশটি নেকি দান করেন, তার দশটি গুনাহ মাফ করেন। (বুখারি ও মুসলিম)
দরুদ পাঠের এহেন গুরুত্ব ও ফজিলত শুনে এক সাহাবি (রা.) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! আমি যত নফল ইবাদত করব, তার এক-চতুর্থাংশ দরুদ শরিফ পড়ব। নবীজি বললেন, তা ভালো, আরও বেশি হলে আরও ভালো। সাহাবি (রা.) বললেন, নফলের এক-তৃতীয়াংশ দরুদ শরিফ পড়ব। নবীজি বললেন, তা ভালো, আরও বেশি হলে আরও ভালো। সাহাবি (রা.) বললেন, নফলের অর্ধাংশ দরুদ শরিফ পড়ব। নবীজি বললেন, তা ভালো, আরও বেশি হলে আরও ভালো। সাহাবি (রা.) বললেন, নফলের দুই-তৃতীয়াংশ দরুদ শরিফ পড়ব। নবীজি বললেন, তা ভালো, আরও বেশি হলে আরও ভালো। সাহাবি (রা.) বললেন, নফলের তিন-চতুর্থাংশ দরুদ শরিফ পড়ব। নবীজি বললেন, তা ভালো, আরও বেশি হলে আরও ভালো। সাহাবি (রা.) তখন আর কিছু বললেন না। (মুসলিম ও তিরমিজি)
নবীজির নাম ‘মুহাম্মদ’ (সা.) শুনলে দরুদ শরিফ পাঠ করা ওয়াজিব। তাশাহহুদের নামাজে নবীজির প্রতি সালাম প্রদান করা ওয়াজিব। নামাজে দরুদ শরিফ পাঠ করা সুন্নত। একই মজলিশে একাধিকবার তাঁর নাম মোবারক শুনলে প্রতিবার দরুদ শরিফ পড়া মোস্তাহাব। সব সময় দরুদ শরিফের আমল করা নফল ইবাদত। আমরা নবীজির নামের পরিবর্তে ব্যবহৃত বিকল্প বা সর্বনামের ক্ষেত্রেও দরুদ শরিফ পড়ে থাকি; এটি আফজল বা উত্তম।