শিরোনাম
◈ টি-টো‌য়ে‌ন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে আয়ারল্যান্ডের নিচে বাংলাদেশ নারী দল ◈ সোমবার নয় মঙ্গলবার দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া ◈ জাতীয় নির্বাচন: দলগুলোর নানা মত, ইসির ডিসেম্বরের প্রস্তুতি ◈ তারেক রহমানের ফেসবুক পোস্ট: প্রশংসনীয় এই মানসিকতা অব্যাহত থাকুক  ◈ শেখ হাসিনার শাসনামলের গুম, খুন, অর্থপাচার: আল জাজিরার তথ্যচিত্রে বিস্ফোরক তথ্য ◈ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ হ্যাকড ◈ এবার রিপাবলিক বাংলা বন্ধ ও ময়ূখকে গ্রেফতারের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গে বি'ক্ষো'ভ (ভিডিও) ◈ দেশে জঙ্গি ঢুকিয়ে দিয়ে যুদ্ধের নাটক করছে বিজেপি: কীর্তি আজাদ ◈ ডেটিং নিয়ে দ্বন্দ্ব: তিন কলেজেই মেয়েরা ডেট করে, তাই হয় মারামারি', বললেন সিটি কলেজের ছাত্রীরা ◈ দেশের বাজারে কমল স্বর্ণের দাম, ভরি কত?

প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৮:৩০ সকাল
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৮:৩০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইসলামের দৃষ্টিতে হিংসার কুফল

এহসানুল হক মোজাদ্দেদী : আরবি ‘হাসাদ’ শব্দের অর্থ হিংসা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি। পরিভাষায় অন্যের ভালো কিছু দেখে তা নষ্ট হওয়ার কামনা করাকে হাসাদ বলে। ‘হাসাদ’ তথা হিংসা আত্মবিধ্বংসী বদগুণ। হিংসুকের হিংসা থেকে আশ্রয় প্রার্থনার কথা স্বয়ং আল্লাহ বলেছেন। ‘হিংসুকের হিংসা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করো, যখন সে হিংসা করে’ (সুরা ফালাক, আয়াত : ৬)। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তারা কি মানুষের প্রতি এজন্যই হিংসা করে যে, আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ দান করেছেন’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৫৪)। রসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর নেয়ামতের কিছু শত্রু আছে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর নেয়ামতের শত্রু কারা? রসুল (সা.) বললেন, ‘হিংসুকরা। হিংসুক তো এজন্যই হিংসা করে আল্লাহ কেন তার বান্দাকে অনুগ্রহ করেছেন’ (দাওয়াউল হাসাদ)।

কারো ভালো কিছু দেখে অসহ্যবোধ করা বা তার অকল্যাণ কামনা করা কিংবা ওই ব্যক্তির ভালো বিষয়টির ধ্বংস চাওয়াকে হিংসা-দ্বেষ ও ঈর্ষা বলে। একজন মুমিন কখনোই আরেক ভাইয়ের ভালো ও কল্যাণের বিষয় দেখে অসহ্যবোধ কিংবা হিংসাতুর হতে পারে না। এতে করে যে নিজের ক্ষতিই সাধিত হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, হিংসা নেকিকে এমনভাবে খেয়ে ফেলে যেভাবে আগুন কাঠকে খেয়ে ফেলে, অর্থাৎ জ্বালিয়ে দেয়’ (আবু দাউদ : ৪৯০৩)। হিংসার নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সহিহ মুসলিম শরিফে একটি হাদিস এসেছে। এটিও হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পরকে হিংসা করো না। একে অপরের প্রতি বিদ্বেষভাব রেখো না। একজন আরেকজন থেকে আলাদা হয়ো না। বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও’ (মুসলিম : ৬৩৫৩)।

হিংসা কত বড় গুনাহ তা বুঝাতে গিয়ে ইমাম গাজ্জালী (রহ.) লেখেন, ‘পৃথিবীতে সর্বপ্রথম পাপ হলো হিংসা। বাবা আদমের (আ.) মর্যাদা দেখে তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয় ইবলিস। ঈর্ষা ও হিংসা থেকেই ইবলিসের মনে জন্ম নেয় অহঙ্কার। আর অহঙ্কারের কারণেই সে আদমকে (আ.) সিজদা করতে অস্বীকার করে। ফলে সে চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত ও মরদুদ হয়ে যায়।’ এরপর ইমাম গাজ্জালী আরেকটি ঘটনা বর্ণনা করেন। তিনি লেখেন, ‘একবার মুসা (আ.) দেখলেন এক ব্যক্তি আল্লাহর আরশের ছায়ায় বসে আছেন। তিনি ভাবলেন, এ ব্যক্তি নিশ্চয় খুব বুজুর্গ লোক হবে। তাই তার এত মর্যাদা। মহান আল্লাহকে তিনি বললেন, হে আল্লাহ! এ ব্যক্তির নাম-ঠিকানা কী? আল্লাহতায়ালা তার পরিচয় না বলে বললেন, মুসা! এ লোক কোন আমলের দ্বারা এত মর্যাদা পেয়েছে জানো? সে কখনো কারো প্রতি ঈর্ষা ও বিদ্বেষভাব পোষণ করেনি। তাই আমার কাছে সে এত বড় মর্যাদা পেয়েছে (কিমিয়ায়ে সাদাত : ৪র্থ খণ্ড, ৯২-৯৩ পৃষ্ঠা)। অন্যের ভালো দেখে অন্তর্জ্বালায় ভোগা মুনাফিকের চরিত্র। আর এমন পরিবেশে মুমিনের কর্তব্য হলো ধৈর্য অবলম্বন করা। এতে করে আমাদের দুনিয়া ও আখেরাত দুটোই সুন্দর ও সুখময় হয়ে উঠবে।

লেখক : খতিব, মণিপুর বাইতুর রওশন জামে মসজিদ, মিরপুর, ঢাকা
সূত্র : বাংলাদেশের খবর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়