শিরোনাম
◈ আদানির বকেয়ার সব টাকা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ◈ মাঠে ছড়িয়ে থাকা লেবু ও  ডিম দে‌খে ম্যাচ খেলতে আসা ‌ক্রিকেটাররা ভয়ে পালালেন ◈ ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আপত্তি মোদি সরকারের! ◈ উনি ক্লাসে বাজে ঈঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করেন ◈ এবার নিউ ইয়র্ক মেয়রপ্রার্থী মামদানিকে গ্রেপ্তারের হুমকি ট্রাম্পের!, তীব্র প্রতিক্রিয়া ◈ বউ পেটানোয় শীর্ষে খুলনা ও বরিশালের মানুষ: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (ভিডিও) ◈ ক‌ষ্টের জ‌য়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনা‌লে রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ দুপু‌রে এ‌শিয়ান কাপ বাছাই‌য়ে স্বাগ‌তিক মিয়ানমা‌রের বিরু‌দ্ধে লড়‌বে বাংলাদেশ নারী দল ◈ প্রথম ওয়ান‌ডে ম‌্যা‌চে মুশফিক-রিয়াদের জায়গায় খেলবেন লিটন দাস ও মিরাজ ◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়?

প্রকাশিত : ৩১ মে, ২০১৮, ১০:৫১ দুপুর
আপডেট : ৩১ মে, ২০১৮, ১০:৫১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিশ্বকাপে আত্মঘাতী গোল করে ফুটবলার খেসারত দিয়েছিল জীবন দিয়ে

স্পাের্টস ডেস্ক : শিরোনামটা দেখে চোখ কপালে উঠতে পারে! কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবলে হারের খেসারত দিতে হয়েছে জীবন দিয়ে। আত্মঘাতী এক গোলের জন্য ভক্তরা খুন করেছেন তাদেরই প্রিয় খেলোয়াড়কে। কলম্বিয়ার সেই ফুটবলারের রক্তাক্ত ছবিটা এখনও দাগ কেটে যায়। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন এস্কোবার। স্তম্ভিত হয়েছিল বিশ্ব। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়া বরাবরই শক্তিশালী ফুটবল দল। তাদের দেশের এস্কোবারকে আত্মঘাতী গোলের জন্য ক্ষমা করেনি পেশাদার খুনিরা।

দুই দশক আগেকার কথা। ১৯৯৪ সালের ২ জুলাই। কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরে প্রকাশ্যেই ৬টি গুলি করা হয়েছিল ডিফেন্ডার আন্দ্রে এস্কোবারকে। লুটিয়ে পড়েছিলেন এস্কোবার।
কী ছিল তাঁর অপরাধ ? ফিরতে হবে ১৯৯৪ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বকাপের আসরে। গ্রুপ লিগ থেকে উঠে পরবর্তী পর্বের জন্য লড়াই করতে তৈরি কলম্বিয়া। তাদের মুখোমুখি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ঘরের মাটিতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। ফলে দেখা দিয়েছে টানটান উত্তেজনা। ২২ জুন ছিল খেলার দিন। দুই দেশের সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়েছিল৷ সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। খেলা শুরু হতেই কলম্বিয়ার আক্রমণ শুরু হয়। প্রতি আক্রমণ করে ইউএসএ। ম্যাচের বল দখলের লড়াই তারিয়ে উপভোগ করছিলেন দর্শকরা। এমন সময় ছন্দপতন। খেলার তখন ৩৩ মিনিট পার হয়েছে। মার্কিন ফুটবলারদের আক্রমণ রুখতে গিয়েই আত্মঘাতী গোলটি করে ফেললেন এস্কোবার।

সেই মুহূর্তে গ্যালারির জুড়ে উল্লাস আমেরিকানদের। ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন কলম্বিয়ান সমর্থকরা। শেষে কিনা ক্যাপ্টেনই ধসিয়ে দিল সব। হতাশা কাটিয়ে মাটি থেকে উঠে দাঁড়ালেন এস্কোবার। হলুদ জার্সির উজ্জ্বল কলম্বিয়ান তখন যেন লজ্জায় কুঁকড়ে যাচ্ছেন। সতীর্থরা ছুটে এলেন। তাঁকে সান্ত্বনা জানালেন। শুরু হল পিছিয়ে থেকে কলম্বিয়ার নতুন লড়াই। তীব্র আক্রমণ আছড়ে পড়ছিল ইউএসএ গোলবক্সে। কিন্তু গোল হচ্ছিল না। সেদিন ফুটবল ভাগ্য ভর করেছিল মার্কিনীদের উপরেই। ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতে নেয় ইউএসএ। ব্যাস ছিটকে যেতে হল কলম্বিয়াকে।

দশদিন পরের ঘটনা। বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেও জমজমাট মেডেলিন শহর চলেছে নিজের ছন্দে। দেশে ফিরে একান্তে একটি বারে বসেছিলেন এস্কোবার। কে জানতো তাঁর নিয়তি এখানেই অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে আছে। ভগ্ন মনে বারে বসেছিলেন এস্কোবার। সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি করা হল। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এস্কোবারকে প্রতিবার গুলি করার সময় সেই লোকটা ‘গোল’ বলে চেঁচিয়ে উঠেছিল। নিশ্চিন্তে খুন করে আততায়ী একটি গাড়িতে করে পালায়। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল।

আন্দ্রে এস্কোবার নিহত। এই খবর ছড়িয়ে পড়ে মেডেলিন শহর থেকে কলম্বিয়ার সীমান্ত পেরিয়ে বিশ্বজুড়ে। ততক্ষণে রক্তাক্ত ফুটবলারের দেহের ছবি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এস্কোবারকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

মনে করা হয়, এস্কোবারের আত্মঘাতী গোলের কারণে কলম্বিয়ার জুয়াড়িরা ওই ম্যাচে প্রচুর টাকার বাজি হেরে যায়। দেশে ফিরতেই তারাই খুন করেছিলো এই ছিমছাম খেলোয়াড়কে। অনেকের মতে এস্কোবারের মৃত্যুর কারণ ছিলো তাঁরই দেশের তীব্র জাতীয়তাবাদী সমর্থকদের ভাবাবেগ। যে কারণেই হোক, সেই প্রথম কোনও বিশ্বকাপার ফুটবলার খুন হলেন।

এস্কোবারের স্মৃতি ফিকে হয়নি। তাঁর স্মরণে বিশেষ প্রকল্প চালানো হয় কলম্বিয়ায়। রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ ও দারিদ্রে জর্জরিত শিশুরা সেখানে ফুটবল প্রশিক্ষণ নেয়। তৈরি হয় ভবিষ্যতের ফুটবলার। সেই কলম্বিয়া আবারও বিশ্ব ফুটবলের আসর মাতাতে হাজির হয়েছে রাশিয়ায়। -বিডিপ্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়